চিরতার আশ্চর্য উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে ২১টি কার্যকরী তথ্য জানুন

চিরতার আশ্চর্য উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে আজ আমরা বিস্তারিত জানতে চলেছি। জ্বর, অতিসার এবং দুর্বলতা ইত্যাদি সমস্যা সমাধানে চিরতা খুব উপকারী, চিরতাতে রয়েছে প্রচুর পুষ্টিকর স্বাস্থ্য উপাদান যা আমাদের শরীর সুস্থ রাখতে ব্যাপক গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে। 

চিরতার-আশ্চর্য-উপকারিতা

চিরতা প্রাকৃতিক ভীষণ, যা হজম শক্তি বাড়ানো ও ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে উপকারী। চিরতা প্রাকৃতিক ওষুধের মত কাজ করে, তবে সঠিক পরিমাণে না খেলে উপকারের বদলে ক্ষতি বেশি হতে পারে তাই উপকারী ও অপকারী গুনাগুন জানা জরুরী। তবে আর দেরি কেন, চলুন শুরু করা যাক। 

পেজ সূচিপত্রঃ চিরতার আশ্চর্য উপকারিতা 

চিরতার আশ্চর্য উপকারিতা  

চিরতার আশ্চর্য উপকারিতা সম্পর্কে বলতে গেলে এর অনেক গুনাগুন আমাদের সামনে চলে আসে। চির তা একটি অসাধারণ ভেষজ উদ্ভিদ যা আদিকাল থেকে নানা ধরনের চিকিৎসা ব্যবহৃত হয়ে এসেছে। চিরতা তেতো স্বাদের জন্য বহুল পরিচিত একটি প্রাকৃতিক ভেষজ। নিয়মিত কিছু নিয়মকানুন মেনে পর্যাপ্ত পরিমাণে চিরতা খেলে অনেক উপকার পাওয়া যায়। চলুন চিরতার ২১টি আশ্চর্য উপকারিতা সম্পর্কে বিস্তারিত জেনে নেই।

চিরতার ২১টি উপকারিতা

  • চিরতা রক্তের শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখে, যা ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে ব্যাপক ভূমিকা পালন করে থাকে।
  • চিরতার রস শরীরের তাপমাত্রা স্বাভাবিক রাখতে কার্যকর ভূমিকা পালন করে। এবং ম্যালেরিয়া ও টাইফয়েড এর মত জ্বর কমানোর ক্ষেত্রে ব্যাপক ভূমিকা পালন করে।
  • চিরতা আমাদের শরীরের রক্ত বিশুদ্ধ করে এবং ত্বকের ব্রণের সমস্যা ক্ষেত্রে কার্যকরী ভূমিকা পালন করে।
  • চিরতার রস ত্বকের উজ্জ্বলতা বৃদ্ধিতে ব্যাপক ভূমিকা পালন করে।
  • চিরতরে রয়েছে শীতল অনুভূতিযুক্ত উপাদান, যা মানসিক চাপ কমিয়ে দেয় এবং মনকে শান্ত রাখতে সাহায্য করে।
  • চিরতা আয়রন শোষনের ক্ষমতা বৃদ্ধি করে, যার ফলে অ্যানিমিয়া থেকে আমরা সহজে মুক্তি পেতে পারি।
  • চিরতার রস সেবন করলে চুলের গোড়া মজবুত হয় এবং খুশকি দূর করতে ভূমিকা পালন করে।
  • চির তাতে উপাদান পিওরসের নিঃসরণ বাড়িয়ে দেয় এবং হজমের ক্ষেত্রে উপকারী ভূমিকা পালন করে। চিরতার রস কদম্বা সমস্যা থেকে আমাদের মুখ নিতে পারে। এটি পান করলে খাবারের প্রতি আকর্ষণ সৃষ্টি হয় এবং অনীহা কমে।
  • চিরতার তেতো উপাদান বিপাকক্রিয়া বৃদ্ধি করে এবং ফ্যাট বার্নিং প্রক্রিয়া কে গতিশীল করতে সাহায্য করে।
  • চিরতার রস সেবন করলে পেটের যাবতীয় সমস্যা দূর হয়, এবং হজম শক্তির উন্নতি করে।
  • চিরতায় রয়েছে এন্টিব্যাকটেরিয়াল ও এন্টিফাঙ্গাল বৈশিষ্ট্য, যা শরীর থেকে বিভিন্ন ইনফেকশন দূর করতে সাহায্য করে।
  • চিরতার রস আমাদের শরীর থেকে বিষাক্ত পদার্থ দূর করতে সাহায্য করে।
  • চিরতা লিভারের কার্যকারিতা বাড়ায় ও টক্সিন দূর করে যা লিভারের জন্য অনেক উপকারী।
  • চিরতা ম্যালেরিয়া ও জ্বর নিরাময় সাহায্য করার পাশাপাশি ভাইরাস ও সংক্রমণ প্রতিরোধ করে।
  • পেটের সংক্রমণ কোমায় যেমন ডায়রিয়া মসয় ইত্যাদিতে কার্যকরী ভূমিকা পালন করে।
  • চিরতরে থাকা গুরুত্বপূর্ণ উপাদান আঁচিল ও চর্মরোগ নিয়ন্ত্রণ করে।
  • চিরতা মহিলাদের ঋতুস্রাব ও সংক্রমণ কমাতে সাহায্য করে।
  • চিরতা উদ্বেগ ও মানসিক চাপ কমিয়ে স্নায়ু ভালো রাখতে সাহায্য করে।
  • চিরতা কোলেস্টেরলের মাত্রা কমিয়ে হৃদরোগের ঝুঁকি কমাতে সাহায্য করে।
  • চিরতা কিডনির কার্যকারিতা উন্নত করে এবং সংক্রমণ প্রতিরোধ করে।
  • চিরতা হাড় গঠন ও হাড়ের দুর্বলতা দূর করতে সাহায্য করে।

চিরতা কি কিডনির ক্ষতি করে 

চিরতা কি কিডনির ক্ষতি করে এর বিশ্লেষণে আমরা বলতে পারি, প্রাকৃতিক উপাদানের ক্ষতি নির্ভর করে এর ব্যবহার না জানা এবং অতিরিক্ত ব্যবহারের উপর। সঠিক পরিমাণে চিরতা খেলে কিডনির ক্ষতি হয় না বরং উপকার হয়। কারণ এটি শরীরে থাকা টক্সিন বের করতে সাহায্য করে এবং সংক্রমণ প্রতিরোধ করে। তবে অতিরিক্ত বা দীর্ঘ সময় ধরে চিরতা সেবন করলে কিডনির উপর অতিরিক্ত চাপ পড়তে পারে, যা ক্ষতির কারণ হতে পারে। 
চিরতা আমাদের শরীর থেকে টক্সিন উপাদান দূর করতে সাহায্য করে। এটি প্রস্রাব বৃদ্ধির উপাদান হিসেবে আমাদের শরীরের কাজ করে, যার ফলে কিডনির উপর বিশেষ প্রভাব সৃষ্টি করে। চিরতার অতিরিক্ত ও দীর্ঘমেয়াদি ব্যবহারে কিডনির কার্যক্ষমতা কমে দিতে পারে। যার ফলে বলা যায়, বীরভূমে দ্বিতীয়তা ব্যবহার করলে কিডনির ড্যামেজ হওয়ার কিছুটা সম্ভাবনা রয়েছে। বিশেষ করে যারা কিডনি রোগে ভুগছেন তাদের চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে চিরতা খাওয়া উচিত। 

চিরতায় স্যার্মারিন ও স্যামারিন নামক ২টি উপাদান রয়েছে, যা কিডনিও লিভার পরিষ্কার কার্যকর ভূমিকা পালন করে। অতিরিক্ত ব্যবহার করলে এই উপাদান দুটো শরীরের জন্য বিষাক্ত হয়ে উঠতে পারে। চিরতার অতিরিক্ত ব্যবহার শরীরে ইলেকট্রোলাইট ভারসাম্য নষ্ট করে। এতে কিডনির ফিল্টারিং ক্ষমতা দুর্বল করার ক্ষেত্রে ভূমিকা রাখে। যাদের কিডনির সমস্যা রয়েছে তাদের এই বিষয়গুলি সম্পর্কে একটু বেশি সতর্ক হওয়া উচিত।

খালি পেটে চিরতা খাওয়ার উপকারিতা 

খালি পেটে চেয়ে তো খাওয়ার উপকারিতা সম্পর্কে এখন আমরা বিস্তারিত জানতে চলেছি। আমাদের বিভিন্ন স্বাস্থ্য সমস্যা ক্ষেত্রে চিরতা যুগ যুগ ধরে ব্যবহার হয়ে চলেছে। খালি পেটে চিরতা খেলে বিশেষ ধরনের কিছু উপকার পাওয়া যায়। বিশেষ করে শরীর থেকে টক্সিন দূর করা এবং হজম শক্তি বাড়াতে কার্যকরী ভূমিকা পালন করে। চলুন এই বিষয় সম্পর্কে বিস্তারিত জেনে নেই।
  • খালি পেটে চিরতা খেলে শরীরের পিএইচ ভারসাম্য রক্ষা হয়, যার ফলে শরীরের জমে থাকা অতিরিক্ত এসিড বের হয়ে যায়।
  • খালি পেটে চিরতরে রস খেলে পেটের ক্ষতিরকর ধ্বংস হয় এবং অন্ত পরিষ্কার থাকে।
  • খালি পেটে চিরতার রস খেলে লিভার থেকে বিষাক্ত পদার্থ দূর করে দেওয়ার জন্য ব্যাপক হয়ে থাকে।
  • সকালে ঘুম থেকে ওঠার পর বমি বমি ভাব বা অরুচি সমস্যা দেখা দিলে চিরতার রস কার্যকরী ভূমিকা পালন করে।
  • খালি পেটে চিরতার রস খেলে গল ব্লাডারের পিওরসউৎপাদন বৃদ্ধি পায়, যার ফলে খাবার হজমে সাহায্য হয়ে থাকে।
  • খালি পেটে চিরতার রস খেলে মানসিক চাপ ও উদ্বেগ কমাতে সাহায্য করে।
  • খালি পেটে চিরতার রস খেলে শরীরকে সতেজ অনুভূতি দেয় এবং ক্লান্তি দূর করতে সাহায্য করে।
  • খালি পেটে চিরতার রস খেলে রক্ত পরিষ্কার হয় এবং ত্বকের উজ্জ্বলতা বৃদ্ধিতে সাহায্য করে।

চিরতা খাওয়ার নিয়ম

চিরতা খাওয়ার নিয়ম সম্পর্কে এখন আমরা বেশ কিছু বিষয় জানতে চলেছি। চিরতা একটি শক্তিশালী ভেষজ উদ্ভিদ, যা আমাদের শরীরে বিভিন্ন সমস্যার সমাধানে কার্যকর ভূমিকা পালন করে থাকে। নির্দিষ্ট নিয়ম অনুসরণ করে উপাদান ব্যবহার করলে অনেক উপকার পাওয়া যায়। চিরতার ব্যবহারের ক্ষেত্রে অতিরিক্ত ব্যবহার পরিহার করা উচিত। চলুন এর ব্যবহার ও নিয়ম সম্পর্কে আরো কিছু বিস্তারিত তথ্য জেনে নেই।
  • পানির সাথে ভিজিয়ে খাওয়াঃ এক গ্লাস পানিতে ২-৩ টুকরো শুকনো চিরতা সারারাত ভিজিয়ে রাখুন। সকালে সেই পানি ছেঁকে খালি পেটে পান করুন। এটি লিভারের জন্য উপকারী এবং রক্ত পরিষ্কার করতে সাহায্য করে।
  • চিরতা পাউডার খাওয়ার নিয়মঃ আধা চা চামচ চিরতা গুঁড়ো এক গ্লাস উষ্ণ গরম পানির সাথে মিশিয়ে পান করুন। চাইলে একটু মধু বা লেবুর রস যোগ করতে পারেন স্বাদ সহনীয় করার জন্য। প্রতিদিন সকালে বা রাতে এটি খাওয়া যেতে পারে।
  • চিরতা চা বানিয়ে খাওয়াঃ এক কাপ পানিতে ১-২ চামচ চিরতা গুঁড়ো বা শুকনো চিরতা দিয়ে ৫-১০ মিনিট ফুটিয়ে নিন। ঠান্ডা হলে ছেঁকে নিয়ে পান করুন। স্বাদ কম তিতা করতে চাইলে সামান্য মধু যোগ করতে পারেন।
  • ক্যাপসুল বা ট্যাবলেট আকারে খাওয়াঃ যদি তিতাভাব সহ্য করতে না পারেন, তাহলে হারবাল ফার্মেসি থেকে চিরতার ক্যাপসুল বা ট্যাবলেট কিনে খেতে পারেন। পরিমাণ ও সময় ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী নির্ধারণ করুন।
  • খাওয়ার সময় ও পরিমাণঃ সাধারণত দিনে ১-২ বার খাওয়া যায়। অতিরিক্ত খেলে গ্যাস্ট্রিক, রক্তচাপ কমে যাওয়া বা ডিহাইড্রেশন হতে পারে, তাই সংযত মাত্রায় খাবেন।

চিরতার পুষ্টি উপাদান

চিরতার পুষ্টি উপাদান সম্পর্কে এখন আমরা বিস্তারিত জানতে চলেছি। চিরতা এমন একটি উদ্ভিদ যা আদিকাল থেকে নানা সমস্যায় ব্যবহার হয়ে আসছে। এটি পরিমিত পরিমাণে খাওয়ার মাধ্যমে আমাদের নানা সমস্যা থেকে মুক্তি দিয়ে থাকে। চিরতরে রয়েছে প্রচুর উপকারী উপাদান, যা আমাদের দীর্ঘকালীন শারীরিক সুস্থতার জন্য প্রয়োজন হয়ে থাকে। নিয়ম মেনে ও চিরতার পুষ্টি উপাদান সম্পর্কে জেনে সঠিক নিয়মে সেবন করলে অনেক ক্ষতির হাত থেকে রক্ষা পেতে পারি। তবে দেরি কেন চলুন পুষ্টি উপাদান সম্পর্কে জেনে নেওয়া যাক। 
চিরতার-পুষ্টি-উপাদান

১০০ গ্রাম চিরতার পুষ্টি উপাদান

নম্বর উপাদান পরিমাণ
প্রোটিন ৪.১ গ্রাম
কার্বোহাইড্রেট ২৮.৫ গ্রাম
ডায়েটরি ফাইবার ৫.৮ গ্রাম
ফ্যাট ০.৩ গ্রাম
ভিটামিন সি ০.৫ গ্রাম
ক্যালসিয়াম ১৯০ মিলিগ্রাম
আয়রন ৩.২ মিলিগ্রাম
পটাশিয়াম ৭৯০ মিলিগ্রাম
ম্যাগনেসিয়াম ৮৫ মিলিগ্রাম
১০ ফসফরাস ৫০ মিলিগ্রাম

চিরতা ভেজানো পানি খেলে কি হয়

চিরতা ভেজানো পানি খেলে কি হয় তা সম্পর্কে বলতে গেলে, চিরতা আপনি যেভাবে খান না কেন আপনার শরীরের জন্য উপকার বয়ে আনবে। চিরতা ভেজানো পানি অনেক উপকারী বলে পরিচিত, বিশেষ করে আয়ুর্বেদ ও প্রাকৃতিক চিকিৎসায়। চিরতা ভেজানো পানি নিয়মিত পান করলে শরীরের অনেক সমস্যা থেকে মুক্তি পাওয়া সম্ভব, চলুন এ সম্পর্কে আরো কিছু তথ্য জেনে নেওয়া যাক।
  • চিরতা ভেজানো পানি পান করলে ক্যালসিয়াম ও ম্যাগনেসিয়ামের শোষণ ক্ষমতা বৃদ্ধি পায়, যার কে মজবুত করে এবং হাড়ের ঘনত্ব বাড়িয়ে দেয়।।
  • চিরতরে জন্য প্রার্থী রয়েছে প্রাকৃতিক কারণ উপাদান, যা আমাদের রক্তের হিমোগ্লোবিনের মাত্রা বাড়িয়ে দেয়। বিশেষ করে নারীদের ক্ষেত্রে এটি ব্যাপক উপকারী হয়ে থাকে।
  • চিরতা ভেজানো পানি খেলে শরীরে ইনসুলিনের সংবেদনশীলতা বৃদ্ধি পায়, যার ফলে টাইপ ২ ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণের ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।
  • চিরতা ভেজানো পানি খেলে উপকারী ব্যাকটেরিয়া বৃদ্ধি পায় এবং ক্ষতি কারক ব্যাকটেরিয়া ধ্বংসের মাধ্যমে শরীরকে সুস্থ রাখে।
  • ফুসফুস পরিষ্কার রাখতে চিরতা ভেজানো পানির বিকল্প নেই। বিশেষ করে ধূমপানীয়দের জন্য একটি ব্যাপক কার্যকারী ভূমিকা পালন করতে পারে।
  • যেন পানি খেলে ক্ষুধা নিয়ন্ত্রণে থাকে। এটি শরীরের অতিরিক্ত ক্যালোরি গ্রহণে বাধা দেয়, যা ওজন কমাতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।
  • চিরতা ভেজানো পানি খেলে ক্ষতিকর কৃমি ধ্বংস হয়ে যায় এবং হজম প্রক্রিয়ার উন্নয়ন হয়।
  • চিরতা ভেজানো পানি শরীরের দীর্ঘমেয়াদি প্রদাহ দূর করে এবং পেশী অথবা জয়েন্টের ব্যাথা দূর করতে সাহায্য করে। 
  • চিরতা ভেজানো পানি উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে ও হার্টের জন্য ভালো কাজ করে থাকে।
  • চিরতা ভেজানো পানি শরীরের টক্সিন বের করে এবং ত্বকের সমস্যা কমাতে ভূমিকা রাখে।
  • চিরতা ভেজানো পানি রক্তের শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখে, যারা ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। 
  • চিরতা ভেজানো পানির তেতো স্বাদ হজম শক্তির উন্নত করতে সাহায্য করে এবং গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা কমে।

চিরতা কতদিন খাওয়া নিরাপদ

চিরতা কতদিন খাওয়া নিরাপদ এ সম্পর্কে এখন আমরা বেশ কিছু তথ্য জানতে চলেছি। চিরতার আশ্চর্য উপকারিতা গুলো জেনে অনেকেই অধিক পরিমাণ চিরতা কে থাকেন। যাতে করে উপকারের চেয়ে বিপরীত প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়ে ক্ষতি বেশি হয়। দীর্ঘদিন দৃঢ়তা খেলে শরীরের বিরূপ প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হতে পারে। চিরতা ব্যবহারের আগে নির্দিষ্ট নিয়মের মধ্যে কতদিন ধরে চিরতা স্পষ্ট ধারণা থাকতে হবে। তাই চলুন এ সম্পর্কে বেশ কিছু তথ্য জেনে নেই।

আপনি যদি চিরতার অসাধারণ তো দুর্বলতা ও হজম সমস্যার জন্য খেয়ে থাকেন সেক্ষেত্রে ২ থেকে ৩ সপ্তাহ সেবন করা যেতে পারে। ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ বা কিডনি সমস্যার জন্য ১ থেকে ২ মাস টানা খাওয়া যেতে পারে, তারপর অবশ্যই বিশ্রাম নিতে হবে। এই বিষয়গুলো চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে খাওয়া উচিত চিকিৎসকের পরামর্শর কোন বিকল্প নেই।
অতিরিক্ত দীর্ঘমেয়াদি চিরতা ব্যবহার করলে শরীরের বেশ কিছু সমস্যা দেখা দিতে পারে। সপ্তাহে একদিন ব্যবহার করলে ব্যতিক্রম শরীরের উপকারিতা পাওয়া যায় এবং সম্ভাব্য ঝুঁকির হাত থেকে রক্ষা পাওয়া যায়। সপ্তাহে দুই থেকে তিন দিন ব্যবহার করাবেই ঝুঁকির কারণ হতে পারে এবং তার নির্দিষ্ট নিয়মে ব্যবহার করলে এটি একটি উপকারি কৌশল হতে পারে। বেশি দিন দরে টানা চিরতা ব্যাবহার করলে কিডনির সমস্যা দেখা দিতে পারে। তাই এই উপকারি ভেষজ চিরতা একটানা দীর্ঘদিন ব্যাবহার করা উসিদ নয়  এতে সমস্যা দেখা দিতে পারে।  

গর্ভাবস্থায় চিরতা খেলে কি হয়

গর্ভাবস্থায় চিরতা খেলে কি হয় এ সম্পর্কে আমরা বেশ কিছু তথ্য জানতে চেয়েছি। চিরতার গুরুত্বপূর্ণ উপাদান আমাদের শরীরের জন্য বেশ উপকারী হলেও গর্ভাবস্থায় এটি খাওয়ার ক্ষেত্রে কিছু সতর্কতা অবলম্বন করা উচিত। গর্ভাবস্থায় এটি গর্ভবতী মা ও শিশুর শারীরিক বিভিন্ন প্রভাব তৈরি করতে পারে। চলুন এই বিষয়গুলো সম্পর্কে আরো বিস্তারিত জেনে নেই।

গর্ভাবস্থায় শরীরে হরমোন ব্যালেন্সের পরিবর্তন হয়ে থাকে। তো হজম প্রক্রিয়াকে উন্নত করলেও এটি হরমোনের উপর বিরূপ প্রভাব ফেলে থাকে। গর্ভাবস্থায় চিরতা খেলে শরীরের অতিরিক্ত ওজন বা অস্বস্তি সৃষ্টি করতে পারে। গর্ভাবস্থায় হজমের সমস্যা একটি সাধারণ বিষয়, চিরতা খেলে এই হজমের সমস্যা বেড়ে যেতে পারে। তাই গর্ব অবস্থায় চিরতা ব্যবহার না করাই ভালো আর ব্যবহার করলেও তা অতি সামান্য পরিমাণে ব্যবহার করা উচিত।
গর্ভাবস্থায়-চিরতা-খেলে-কি-হয়
চিরতা গরম প্রকৃতির বলে মনে করা হয়, যা জরায়ুর সংকোচন বাড়াতে পারে এবং গর্ভপাত বা ডেলিভারির ঝুঁকি তৈরি করতে পারে। চিরতা রক্তচাপ কমে দিতে পারে, যা গর্ভাবস্থায় কখনো কখনো বিপদজনক হতে পারে। চিরতা অতিরিক্ত তিক্ত হওয়ায় এটি গর্ভবতী মায়ের গ্যাস্ট্রিক বা অ্যাসিডিটির সমস্যা বাড়িয়ে দিতে পারে। যদি কোন গর্ভবতী মায়ের ডায়াবেটিস সমস্যা থেকে থাকে তাহলে তার জন্য এটি বিপদজনক হতে পারে। তাই গর্ব অবস্থায় চিরতা খেলেও অতি সামান্য পরিমাণে একজন চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে খাওয়া উচিত।

চিরতার অপকারিতা 

চিরতার অপকারিতা সম্পর্কে এখন আমরা বিস্তারিত জানতে চলেছি। চিরতা খাওয়ার আগে এর উপকারী গুণ এবং অপকারী গুন সম্পর্কে আমাদের ধারণা রাখা উচিত। অনেকেই শুধু চিরতার উপকারী গুণগুলো জেনে অধিক পরিমাণে চিরতা খেয়ে থাকে এতে উপকারের চেয়ে ক্ষতির পরিমাণ বেশি থাকে। তাই চিরতার উপকারিতার পাশাপাশি অপকারিতা সম্পর্কেও জেনে রাখা উচিত এবং অতিরিক্ত চিরতা খাওয়া থেকে বিরত থাকা উচিত। চিরতা খেলে আমাদের শরীরে কি কি ক্ষতিকর প্রভাব ফেলতে পারে চলুন জেনে নেই।
  • অতিরিক্ত চিরতা ব্যবহার করলে গর্ভপাতের ঝুঁকি রয়েছে। এটি গর্ভের পেশী সংকোচন ঘটাতে পারে।
  • অতিরিক্ত চিরতা ব্যবহার করলে পেটের অস্বস্তি, গ্যাসটি, ক এসিডিটি বা পেট ব্যাথার মত সমস্যা সৃষ্টি হতে পারে।
  • গর্ভাবস্থায় যাদের হরমোনাল সমস্যা রয়েছে তাদের ক্ষেত্রে চিরতরে বেশি ব্যবহার করলে হরমোনের ভারসাম্য নষ্ট হতে পারে।
  • অতিরিক্ত চিরতা ব্যবহার করলে রক্তচাপের ভারসাম্য নষ্ট হয়।
  • দীর্ঘদিন চিরতা ব্যবহার করলে লিভার ও কিডনির ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে।
  • চিরতা শরীর থেকে টক্সিন দূর করে দেয়। অতিরিক্ত টক্সিন দূর হয়ে গেলে শরীরে বিরূপ প্রতীক্ষা সৃষ্টি হতে পারে তাই পরিবর্তে পরিমাণে চিরতা খাওয়া উচিত।
  • চির তা হজম প্রক্রিয়াকে স্বাভাবিক রাখতে সাহায্য করে, কিন্তু অতিরিক্ত পরিমাণে চিরতা খেলে বিপরীত প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করতে পারে।
  • চিরতা শরীরের তাপমাত্রা বৃদ্ধি করে, শরীরের অতিরিক্ত তাপমাত্রা বৃদ্ধির ফলে শরীরে তাপমাত্রার ভারসাম্য নষ্ট হতে পারে এতে অসুস্থ সম্ভাবনা রয়েছে। 
  • চিরতা কিছু কিছু মানুষের ক্ষেত্রে এলার্জির সমস্যা সৃষ্টি করতে পারে। যাদের ত্বক সম্মেলনশীল রয়েছে তাদের বুঝে শুনে চিরতা হওয়া উচিত।
  • চির তা অতিরিক্ত প্রস্রাব বাড়িয়ে দিতে পারে, যার ফলে ডিহাইড্রেশন সমস্যা হয়ে থাকে।
  • অতিরিক্ত চিরতা ব্যবহার করলেই স্পন্দন বেড়ে যেতে পারে যা স্বাস্থ্য ঝুঁকি বাড়ায়।
  • চিরতা বেশি পরিমাণে ব্যবহার করলে মাথা ঘোরা বা অস্বস্তির তৈরি করতে পারে।
  • চিরতা অতিরিক্ত ব্যবহার করলে সোডিয়ামের ভারসাম্য নষ্ট হতে পারে।
  • অতিরিক্ত চিরতা ব্যবহারের ফলে রক্তের শর্করার মাত্রা পরিবর্তন হয়, যা ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ।
  • গর্ভাবস্থায় অতিরিক্ত চিরতা খেলে গর্ভস্থ শিশুর শারীরিক বিকাশের সমস্যা হতে পারে। তাই গর্ভ অবস্থায় চিরতা ব্যবহার না করাই ভালো।
  • অতিরিক্ত চিরতা সেবনের ফলে লিভারে অতিরিক্ত চাপ পড়ে যা এনজাইমের ভারসাম্য নষ্ট করতে পারে।
  • চিরতা সাধারণত হজম শক্তি বৃদ্ধিতে সাহায্য করে, তবে অতিরিক্ত ব্যবহারে বমি বমি ভাব বা বদহজমের কারণ হতে পারে।
  • কিছু মানুষের ক্ষেত্রে চিরতা খাওয়ার পর ত্বকের চুলকানি, ফুসকুড়ি বা অন্যান্য এলার্জির প্রতীকটা দেখা দিতে পারে।
  • চিরতা উচ্চ রক্তচাপ কমাতে সাহায্য করে, তবে যদি স্বাভাবিক বা নিম্ন রক্তচাপের কেউ এটি খায়, তাহলে মাথা ঘোরা, দুর্বলতা, ক্লান্তি বা ব্লাড প্রেসারের অতিরিক্ত কমে যাওয়ার সমস্যা হতে পারে।

লেখকের শেষ কথাঃ চিরতার আশ্চর্য উপকারিতা

চিরতার আশ্চর্য উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে এতক্ষন আমরা বেশ কিছু তথ্য জানতে এবং বুঝতে পেরেছি যে, চিরতা খাওয়ার ক্ষেত্রে অবশ্যই কিছু নিয়ম মেনে পরিমিত পরিমাণে চিরত খাওয়া উচিত।এবং গর্ভবতী বাসস্থান দানকারী মায়েদের, নিম্ন রক্তচাপ বা শর্করা সমস্যা থাকলে, যদি আগে থেকে গ্যাস্ট্রিক বা পিটির আলসারের সমস্যা থাকে উক্ত সমস্যাগুলো থাকলে চিরতা না খাওয়াই উত্তম। এবং যদি খেতেই হয় তাহলে একজন অভিজ্ঞ ডাক্তারের পরামর্শ নিয়ে পরবর্তী পরিমানে খাওয়া উচিত।

আশা করছি আপনি উক্ত আর্টিকেল থেকে কাঙ্খিত বিষয়গুলি জানতে পেরেছেন। এতক্ষন আমাদের আর্টিকেলের সঙ্গে থাকার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ। এ ধরনের আরো গুরুত্বপূর্ণ তথ্যমূলক আর্টিকেল পেতে আমাদের ওয়েবসাইটটিকে  নিয়মিত ভিজিট করুন এবং আপনি যদি উপকৃত হয়ে থাকেন তাহলে আপনার বন্ধুদের মাঝে শেয়ার করতে ভুলবেন না। আপনি চাইলে আমদের ওয়েবসাইট টিকে ফলো করে রাখতে পারেন ধন্যবাদ।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

আমরা জানবোর নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url