আয়রন সমৃদ্ধ খাবারের তালিকা-আয়রন সমৃদ্ধ ফল এবং সবজি
আয়রন সমৃদ্ধ খাবারের তালিকা! সুস্থ শক্তিশালী থাকার জন্য জানুন কোন খাবারে আছে
বেশি আয়রন এবং কিভাবে এগুলো আপনার প্রতিনিয়ত খাদ্য তালিকায়
রাখবেন। প্রাকৃতিকভাবে শক্তি বাড়াতে ও ক্লান্তি দূর করতে আয়রন সমৃদ্ধ
খাবার গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।
আয়নের ঘাটতি দূর করে শরীরের শক্তি ও কর্ম ক্ষমতা বাড়ানোর জন্য সুস্বাদু ও
পুষ্টিকর খাবার এবং আয়রন সমৃদ্ধ ফল এবং সবজি সম্পর্কেও জানব। রক্তস্বল্পতা
দূর করতে ও উজ্জ্বলতা ফিরে পেতে আয়রন সমৃদ্ধ খাবার অত্যন্ত
গুরুত্বপূর্ণ। তবে দেরি কেন, চলুন শুরু করা যাক।
পেজ সূচিপত্রঃ আয়রন সমৃদ্ধ খাবারের তালিকা
আয়রন সমৃদ্ধ খাবারের তালিকা
আয়রন সমৃদ্ধ খাবারের তালিকা জেনে রাখা জরুরি সুস্থ থাকতে হলে। আয়রন শরীরের জন্য
গুরুত্বপূর্ণ, কারণ এটি হিমোগ্লোবিন তৈরি করে এবং অক্সিজেন পরিবহন করতে সাহায্য
করে। এর অভাবে রক্তস্বল্পতা (অ্যানিমিয়া) হতে পারে, যা ক্লান্তি, দুর্বলতা ও
শ্বাসকষ্টের কারণ হয়। আয়রন দুই ধরনের - হেম আয়রন (প্রাণিজ উৎস, যেমন লাল মাংস,
মাছ, কলিজা) যা সহজে শোষিত হয়। নন-হেম আয়রন (উদ্ভিজ্জ উৎস, যেমন ডাল, শাক,
বাদাম) যা শোষিত হতে কিছুটা সময় লাগে।
হেম আয়রনের শোষণ বাড়াতে ভিটামিন C সমৃদ্ধ খাবার (লেবু, কমলা, টমেটো) খাওয়া
ভালো। কিছু খাবার আয়রন শোষণে বাধা দেয়, যেমনঃ চা, কফি ও দুগ্ধজাত খাবার। বিশেষ
করে গর্ভবতী নারী কিশোর- কিশোরী ও শিশুদের জন্য আয়রন খুবই দরকারি। তবে অতিরিক্ত
আয়রন গ্রহণ করলে সমস্যা হতে পারে, তাই সঠিক পরিমাণ আয়রন খাওয়া উচিত। সহজে
আয়রনের ঘাটতি পূরণের জন্য আয়রনসমৃদ্ধ খাবার সম্পর্কে জেনে রাখা উচিত। তাই চলুন
আয়রন সমৃদ্ধ খাবারের গুলো কি কি তা সম্পর্কে জেনে নেওয়া যাকঃ
আয়রন সমৃদ্ধ খাবারের প্রাণিজ উৎস
- গরুর মাংস
- খাসির মাংস
- মুরগির মাংস
- গরু মুরগির কলিজা
- মাছ (টুনা, স্যালমন, সার্ডিন, ইলিশ)
- সামুদ্রিক খাবার (ঝিনুক, চিংড়ি)
- ডিম
আয়রন সমৃদ্ধ খাবারের উদ্ভিজ্জ উৎস
- পালং শাক, কলমি শাক, মেথি শাক
- মসুর ডাল, ছোলা, সয়াবিন, মটরশুটি
- লাল চাল, গম, ওটস
- খেজুর, কিসমিশ, কাঠবাদাম, কাজুবাদাম
- তিল, চিয়া সিড, সূর্যমুখীর বীজ
- ডার্ক চকলেট
আয়রন শোষণ বাড়ানোর জন্য ভিটামিন C সমৃদ্ধ খাবার (লেবু, কমলা, টমেটো) খাওয়া
ভালো। এবং চা, কফি ও দুগ্ধজাত খাবার কম খান এতে করে সহজে আয়রনের শোষণ বাড়বে,
যা আপনার আরবের ঘাটতি পূরণে সহায়তা করবে। বিশেষ করে গর্ভবতী নারী কিশোর-
কিশোরী ও শিশুদের জন্য আয়রন খুবই দরকারি। তবে অতিরিক্ত আয়রন গ্রহণ করলে
সমস্যা হতে পারে, তাই সঠিক পরিমাণ আয়রন খাওয়া উচিত।
আয়রন সমৃদ্ধ ফল এবং সবজি
আয়রন সমৃদ্ধ ফল এবং সবজি শরীরের রক্তের পরিমাণ বাড়াতে এবং শক্তি বজায় রাখতে
গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। বিশেষ করে যারা নিরামিষ ভোজী বা খুব বেশি প্রাণিজ
খাবার খান না, তাদের জন্য এই উৎসগুলো অত্যন্ত উপকারী। আয়রন সমৃদ্ধ ফল এবং
সবজিগুলো নিয়মিত খেলে রক্ত সম্পন্ন করতে সাহায্য করে। তবে শাকসবজি থেকে নন-হেম
আয়রন শরীরের সহজে শোষণ করতে পারেনা, তাই এটি শ্বশুর বাড়ানোর জন্য ভিটামিন C
সমৃদ্ধ খাবার যেমন- লেবু বা টমেটো সঙ্গে খাওয়া ভালো।
আয়রন সমৃদ্ধ ফলগুলো আয়রনের চমৎকার উৎস। বিশেষ করে শুকনো ফল, দ্রুত রক্তস্বল্পতা
দূর করতে সাহায্য করে। আয়রন সমৃদ্ধ ফল ও সবজি রক্ত তৈরি করা নয়, শরীরের রোগ
প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে ভূমিকা রাখে। তাই প্রতিদিন এই আয়রন সমৃদ্ধ খাবারগুলো
আমাদের প্রতিনিয়ত খাদ্য তালিকায় নির্দিষ্ট পরিমাণ রাখা উচিত। তাই চলুন
আয়রনসমৃদ্ধ ফল এবং সবজি কোন খাবারগুলো থাকে জেনে নেওয়া যাকঃ
আয়রন সমৃদ্ধ ফল
- খেজুর
- কিসমিশ
- ডুমুর
- আঙ্গুর
- বেদনা
- আপেল
- কলা
- আমলকি
আয়রন সমৃদ্ধ সবজি
- পালং শাক
- কলমি শাক
- মেথি শাক
- ব্রকলি
- বিট রুট
- বাঁধাকপি
- মটরশুঁটি
এই ফল ও সবজি নিয়মিত খেলে শরীরের আয়রনের ঘাটতি পূরণ হয় এবং রক্তস্বল্পতা দূর
হয়। নন-হেম আয়রনের শোষণ বাড়ানোর জন্য ভিটামিন C সমৃদ্ধ খাবার খাওয়া
উচিত যেমন- লেবু বা টমেটো সঙ্গে খাওয়া ভালো। এই খাবারগুলো খেলে শরীরে
আয়রনের শোষণের মাত্রা বেড়ে যায়। যাতে করে দ্রুত আয়রন শোষণ হয় এবং
পুষ্টি চাহিদা পূরণ হয়ে থাকে।
গর্ভাবস্থায় আয়রন সমৃদ্ধ খাবার
গর্ভাবস্থায় আয়রন সমৃদ্ধ খাবার খাওয়া অত্যন্ত জরুরী, কারণ এটি
মায়ের শরীরের রক্ত বৃদ্ধি করে এবং শিশুর সঠিক বৃদ্ধি ও বিকাশে সাহায্য
করে। এ সময়ে শরীরে আয়রনের চাহিদা বেড়ে যায়, কারণ গর্ভ অবস্থায়
শিশুদের জন্য প্রস্তুত অক্সিজেন সরবরাহ নিশ্চিত করতে হয়। আয়রনের
অভাবে রক্তস্বল্পতা (অ্যানিমিয়া) হতে পারে, যা মায়ের
ক্লান্তি, দুর্বলতা এবং জটিল প্রসবের ঝুঁকি বাড়ায়।
এই সময় মায়েদের শরীরে অতিরিক্ত রক্ত তৈরি হয়, যা শিশুর সঠিক বিকাশ ও
অক্সিজেন সরবরাহের জন্য প্রয়োজন। এর জন্য মা এবং শিশু সুস্থতা বজায়
রাখতে আয়রন সমৃদ্ধ খাবার অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।আমরা আয়রন সমৃদ্ধ খাবারের
তালিকা সম্পর্কে আগেই প্রকাশ করেছি, গর্ভাবস্থায় এই খাবারগুলো বেশি বেশি
পরিমাণে খাওয়া উচিত। এবং যে খাবারগুলো আয়রন শোষণ করতে বাধা দেয় সেই
খাবারগুলো পরিহার করা উচিত। গর্ভ অবস্থায় সঠিক পরিমাণে আয়রন গ্রহণ করলে
মা ও শিশু উভয় স্বাস্থ্য ভালো থাকে এবং জটিলতা কমে।
বাচ্চাদের আয়রন সমৃদ্ধ খাবার
বাচ্চাদের আয়রন সমৃদ্ধ খাবার অত্যন্ত জরুরী, কারণ এটি রক্ত
তৈরি, মস্তিষ্কের বিকাশ ও শারীরিক বৃদ্ধিতে সাহায্য করে। পর্যাপ্ত
আয়রন না পেলে শিশুর শরীরে রক্তস্বল্পতা (অ্যানিমিয়া) এর মত রোগ
সৃষ্টি হতে পারে। যা ক্লান্তি, দুর্বলতা, মনোযোগের অভাব এবং রোগ
প্রতিরোধ ক্ষমতা কমিয়ে দিতে পারে। তাই শিশুদের বেশি বেশি আয়রন সমৃদ্ধ
খাবার খাওয়ানো অত্যন্ত জরুরী।
শিশুরা প্রাণিজ উৎস থেকে সহজে শোষণযোগ্য আয়রন পেতে পারে যেমন গরুর মাংস,
মুরগির মাংস, ডিম এবং মাছ। এছাড়া উদ্বিজ্জ উৎসের মধ্যে পালং শাক, মেথি শাক,
ডাল, ছোলা, খেজুর, কিসমিশ, বাদাম বাচ্চাদের জন্য আয়রনের ভালো উৎস। তবে
উদ্ভিজ্জ উৎস আয়রন শোষণ করতে পারেনা তাই আয়রন শোষণ বাড়ানোর জন্য ভিটামিন C
সমৃদ্ধ খাবার (লেবু, কমলা, টমেটো) খাওয়া ভালো। এবং চা, কফি ও দুগ্ধজাত খাবার
কম খান এতে করে সহজে আয়রনের শোষণ বাড়বে, যা আপনার আরবের ঘাটতি পূরণে সহায়তা
করবে।
কিছু খাবার আয়রন শোষণে বাধা দেয়, যেমনঃ চা, কফি ও দুগ্ধজাত খাবার। বিশেষ করে
গর্ভবতী শিশুদের জন্য আয়রন খুবই দরকারি। তবে অতিরিক্ত আয়রন গ্রহণ করলে সমস্যা
হতে পারে, তাই সঠিক পরিমাণ আয়রন খাওয়া উচিত। সহজে আয়রনের ঘাটতি পূরণের জন্য
আয়রনসমৃদ্ধ খাবার সম্পর্কে জেনে রাখা উচিত। যদি খাবারগুলো সম্পর্কে আমরা
আগে থেকে জেনে থাকি তাহলে এর পুষ্টি চাহিদা পূরণে সহজ হবে।
শিশুর আয়রনের ঘাটতি হলে চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী বিশেষ খাবার বা
সাপ্লিমেন্ট দিতে পারে সেগুলো নিয়মিত খাওয়াতে হবে। সঠিক পরিমাণে আয়রন
গ্রহণ করলে শিশুর শারীরিক সুস্থ থাকবে, মস্তিষ্কের বিকাশ ভালো হবে এবং
দৈনন্দিন কার্যক্রমের তারা আরো সক্রিয় ও প্রাণবন্ত থাকবে।তাই শিশুদের
সুস্থ বিকাশে নিয়মিত আয়রন সমৃদ্ধ খাবার খাওয়াতে হবে।
কোন মাছে আয়রন বেশি
কোন মাছে আয়রন বেশি এটি আমাদের আগে থেকে জেনে রাখা উচিত। মাছ হলো
আয়রনের চমৎকার একটি উৎস , যা শরীরের হিমোগ্লোবিন তৈরি এবং অক্সিজেন
পরিবহনে ভূমিকা রাখে। বিশেষ করে সামুদ্রিক এবং মিঠাপানির কিছু
মাছ বেশি পরিমাণে আয়রনের সরবরাহ করে থাকে, যার রক্তস্বল্পতা
প্রতিরোধে সাহায্য করে।
আয়রন সমৃদ্ধ মাছের মধ্যে টুনা, স্যালমন, সার্ডিন, ইলিশ, রুই ও কাতলা
অন্যতম। এসব মাছ শুধু আারনি নয় , ওমেগা-৩ ফ্যাটি এসিড, প্রোটিন
এবং অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ পুষ্টি উপাদান সরবরাহ করে, যা স্বাস্থ্য এবং
মস্তিষ্ক বিকাশের জন্য উপকারী ভূমিকা পালন করে। এই মাছগুলো থেকে সহজে
আয়রনের ঘাটতি পূরণ করে নেওয়া সম্ভব। যা আমাদের শরীরকে সুস্থ রাখতে
সাহায্য করে।
বিশেষ করে শিশু, গর্ভবতী নারী এবং যারা রক্তস্বল্পতায় ভুগছেন, তাদের
জন্য মাছের আয়রন খুবই উপকারী। প্রাণিজ উৎসের আয়রন সহজে শুষিত
হয়, তাই মাছ নিয়মিত খেলে শরীরের দ্রুত আয়রনের ঘাটতি পূরণ করতে
পারে। তবে মাছ রান্না করার সময় বেশি ভাজা বা বেশি তাপ দিলে পুষ্টিগুণ
কিছুটা নষ্ট হতে পারে, তাই স্বাস্থ্যকর উপায়ে রান্না করে এই মাছগুলো খেলে
সহজে আয়রনের ঘাটতি পূরণ করতে সাহায্য করবে।
সবচেয়ে বেশি আয়রন সমৃদ্ধ খাবার
সবচেয়ে বেশি আয়রন সমৃদ্ধ খাবার যদি আমরা চিহ্নিত করতে পারি তাহলে দ্রুত
আয়রনের ঘাটতি পূরণ করতে পারব। আয়রন শরীরের গুরুত্বপূর্ণ খনিজ যা রক্তের
অক্সিজেন বহন করার পাশাপাশি শরীরকে অনেক কার্যক্রমের জন্য প্রস্তুত
করে। এটি শক্তি বজায় রাখা বা সামুদ্রিক স্বাস্থ্যের জন্য অত্যন্ত
গুরুত্বপূর্ণ। আপনি যদি আপনার খাদ্য তালিকায় আয়রন বাড়াতে
চান, তাহলে আয়রন সমৃদ্ধ খাবারের মধ্যমে তা সম্ভব। আসুন দেখি
কিছু আয়রন সমৃদ্ধ খাবার যা আপনার খাদ্য তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করতে
পারেন আয়রনের ঘাটতি দ্রুত পূরণের জন্য।
সবচেয়ে বেশি আয়রন সমৃদ্ধ খাবারের প্রাণিজ উৎস
- গরুর কলিজা - প্রতি ১০০ গ্রামে ৬.৫ মিলিগ্রাম আয়রন থাকে
- হাড়সমেত গরুর মাংস - প্রতি ১০০ গ্রামে ৩.৫ মিলিগ্রাম আয়রন থাকে
- চিংড়ি ও সামুদ্রিক মাছ - প্রতি ১০০ গ্রামে ২-৩ মিলিগ্রাম আয়রন থাকে
- ডিমের কুসুম- প্রতি ১০০ গ্রামে ২.৭ মিলিগ্রাম আয়রন থাকে
সবচেয়ে বেশি আয়রন সমৃদ্ধ খাবারের উদ্ভিজ্জ উৎস
- গুড় (খেজুর গুড়/আখের গুড়) - প্রতি ১০০ গ্রামে ১১-১৩ মিলিগ্রাম আয়রন থাকে
- তিল (সাদা ও কালো) - প্রতি ১০০ গ্রামে ১৪.৬ মিলিগ্রাম আয়রন থাকে
- সয়াবিন - প্রতি ১০০ গ্রামে ১৫.৭ মিলিগ্রাম আয়রন থাকে
- কিসমিস ও শুকনো ফল - প্রতি ১০০ গ্রামে ২.৬ মিলিগ্রাম আয়রন থাকে
- পালং শাক - প্রতি ১০০ গ্রামে ২.৭ মিলিগ্রাম আয়রন থাকে
- মসুর ও অন্যান্য ডাল - প্রতি ১০০ গ্রামে ৩-৭ মিলিগ্রাম আয়রন থাকে
এ সকল খাবারের ভালো ফলাফল পেতে এবং আয়রনের শোষণ ক্ষমতা বাড়াতে ভিটামিন
C সমৃদ্ধ খাবার (লেবু, কমলা, টমেটো) খাওয়া ভালো। এবং চা, কফি ও দুগ্ধজাত
খাবার কম খান এতে করে সহজে আয়রনের শোষণ বাড়বে, যা আপনার আরবের ঘাটতি পূরণে
সহায়তা করবে।
আয়রনের অভাবে কি হয়
আয়রনের অভাবে কি হয় এই সম্পর্কে আমাদের জেনে রাখা উচিত। আর ওদের
অভাব একটি সাধারণ স্বাস্থ্য সমস্যা যা অনেকেই জীবনে কোন না পর্যায়ে
সম্মুখীন হয়ে থাকে। আইরন একটি অত্যাবশক খনিজ যার শরীরে গুরুত্বপূর্ণ
ভূমিকা পালন করে, বিশেষ করে অক্সিজেন পরিবহন ও শক্তি উৎপাদনে।শরীরে
পর্যাপ্ত আয়রন না থাকলে বিভিন্ন স্বাস্থ্য সমস্যা দেখা দিতে পারে, যার
মধ্যে ক্লান্তি, দুর্বলতা এবং অ্যানিমিয়া অন্তর্ভুক্ত।
আয়রনের অভাবে শরীরে যা যা হতে পারে
- রক্তস্বল্পতাঃ আরবের ঘাটতিতে হিমোগ্লোবিন কমে যায়, ফলে শরীরে অক্সিজেন সরবরাহ ব্যাহত হয় এবং দুর্বলতা, ক্লান্তি, মাথা ঘোরা ও শ্বাসকষ্ট দেখা দেয়।
- ত্বক ফেকাশে ও চুল পড়াঃ পর্যাপ্ত আয়রন না থাকলে ত্বক উঠ বিবর্ণ দেখায় এবং চুল দুর্বল হয়ে পড়ে।
- হাত-পা ঠান্ডা থাকাঃ আয়রনের অভাবের ফলে শরীরের রক্ত সঞ্চালন কমে যায়, যাহা তো পা ঠান্ডা থাকার কারণ হতে পারে।
- রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমে যায়ঃ শরীরে পর্যাপ্ত আয়রন না থাকলে সহজে সক্রামন ও ইনফেকশন হতে পারে।
- মনোযোগ ও সৃতিশক্তি কমে যাওয়াঃ মস্তিস্কে পর্যাপ্ত অক্সিজেন না পৌঁছালে শেখার খমতা এবং মনোযোগ কমে যেতে পারে।
- গর্ভদকালীন জটিলতাঃ গর্ভবতী নারীদের জন্য আয়রনের ঘারতি মারাত্মক হতে পারে, যা শিশুর শাভাবিক বিকাশে বাধা সৃষ্টি করে।
- অস্বাভাবিক হৃৎস্পন্দনঃ শরীরে কম অক্সিজেন পৌঁছালে হৃৎপিণ্ড এর কাজে বাধা সৃষ্টি হয়, যা হৃদরোগের ঝুঁকি বাড়াতে পারে।
শরীরে আয়রনের গুরুত্ব
শরীরে আয়রনের গুরুত্ব অপরিসীম, আয়রন শরীরের জন্য গুরুত্বপূর্ণ খনিজ, যা প্রধানত
হিমোগ্লোবিন রক্তের লোহিত কনিকায় অক্সিজেন পরিবন কারি প্রোটিন এবং মায়োগ্লোবিন
পেশির অক্সিজেন সংরক্ষণ ও তৈরিতে ভূমিকা রাখে। এটি কোষীয় কার্যক্রম, শক্তি
উৎপাদন এবং রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বিদ্ধিতে সাহায্য করে থাকে।
শরীরে আয়রনের গুরুত্ব
- হিমোগ্লোবিন গঠনে সাহায্য করেঃ আয়রন হিমোগ্লোবিন তৈরি ও মূল উৎপাদন, যা রক্তের মাধ্যমে ফুসফুস থেকে শরীরের বিভিন্ন অংশে অক্সিজেন সরবারাহ করে।
- শক্তি উৎপাদন ও বিপাক্ক্রিয়ার ভুমিকাঃ আয়রন কোষীয় শ্বাস- প্রশ্বাসের মাধ্যমে শক্তি উৎপাদন প্রক্রিয়াকে সাহায্য করে, যা দৈনন্দিন কাজের জন্য প্রয়োজনীয়।
- রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা বিদ্ধি করেঃ শরীরে পরজপ্ত আয়রন থাকলে জিবিনুর বিরুদ্ধে লড়ায় করতে পারে, ফলে রোগ কম হয়।
- মস্তিষ্কের কার্যক্ষমতা বিদ্ধি করেঃ এটি নিউরোটান্সমিটার সংরক্ষণে সাহায্য করে, যা মনোযোগ, সৃতিশক্তি বিদ্ধিতে সাহায্য করে।
- শিশু ও গর্ভবতী নারীদের জন্য গুরুত্বপূর্ণঃ আয়রন শিশুর শিরিরিক ও মানুষিক বিকাশে সাহায্য করে এবং গর্ভবতী মায়েদের জন্য রক্তস্বল্পতা প্রতিরোধে সাহায্য করে।
আয়রন অভাবের উপসর্গ ও চিকিৎসা
আয়রন অভাবের উপসর্গ ও চিকিৎসা আমাদের জেনে রাখা উচিত। আর এর অভাবে
শরীরের রক্তস্বল্পতা হতে পারে, যা
ক্লান্তি, দূর্বলতা,শ্বাসকষ্ট ও মাথা ঘোরানোর মত উপসর্গ সৃষ্টি
করে। এটি রোগ প্রতিরোধের ক্ষমতা কমিয়ে দেয় এবং চুল পড়া ও ত্বক ফ্যাকাসে
হওয়ার কারণ হতে পারে। আর এর ঘাটতি দূর করতে গরুর কলিজা, পালং
শাক, ডাল, গুড় ও ভিটামিন C সমৃদ্ধ খাবার খাওয়া দরকার।আয়রনের ঘাটতি
হলে কি উপসর্গ দেখা যায় এবং এর চিকিৎসা কি চলুন জেনে নেওয়া যাক।
আয়রন অভাবের উপসর্গ
- দুর্বলতা ও অতিরিক্ত ক্লান্তি
- ত্বক ফ্যাকাসে হয়ে যাওয়া
- শ্বাসকষ্ট ও বুক ধড়ফড় করা
- মাথাব্যথা ও মাথা ঘুরানো
- হাত পা ঠান্ডা থাকা ও অবুঝ লাগা
- চুল পড়া ও নখ ভঙ্গুর হয়
- রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমে যাওয়া
- মনোযোগ ও স্মৃতিশক্তি দুর্বল হয়ে পড়ে
- অস্বাভাবিক ক্ষুধা
আয়রন অভাবের চিকিৎসা
- প্রাণিজ উৎস হিসেবে- গরুর কলিজা, মাংস, ডিমের কুসুম, সামুদ্রিক মাছ।
- উদ্ভিজ্জ উৎস হিসেবে- পালং শাক, মসুর ডাল, চিয়া সিড, কাজুবাদাম, তিল, গুড়, খেজুর।
- ভিটামিন C যুক্ত খাবার হিসেবে- লেবু, কমলা, আমলকি খেলে আয়রন বেশি শোষিত হয়।
- যদি খাবার থেকে পর্যাপ্ত আয়রন না পাওয়া যায়, তবে আয়রন ট্যাবলেট, ক্যাপসুল বা সিরাপ খেতে হতে পারে।
- গর্ভবতী নারী ও শিশুদের জন্য বিশেষ ধরনের আয়রন ও ফলিক এসিড ট্যাবলেট দেওয়া হয়।
- গুরুতর রক্তস্বল্পতা হলে আয়রন ইঞ্জেকশন বা রক্ত সঞ্চালন (Blood Transfusion) প্রয়োজন হতে পারে।
উপর একটু উপসর্গগুলি যদি আপনার মধ্যে দেখা যায় তাহলে বুঝতে হবে আপনার শরীরে
আয়রনের ঘাটতি রয়েছে। সেক্ষেত্রে আপনাকে নিম্নোক্ত যে চিকিৎসা গুলো বর্ণনা করা
হয়েছে সেগুলো করতে হবে এবং যে খাবারগুলো আয়রনের পরিমাণ বেশি থাকে সেগুলো
পুষ্টিকর খাবার গ্রহণ করতে হবে। এ সকল নিয়মগুলো মেনে চললে সহজে সুস্থ
থাকা সম্ভব।
শেষ কথাঃ আয়রন সমৃদ্ধ খাবারের তালিকা
আয়রন সমৃদ্ধ খাবারের তালিকা এবং আয়রন সমৃদ্ধ ফল এবং সবজি গুলোকে কি কি সে
সম্পর্কে জেনেছি। এছাড়াও আরনের গুরুত্ব কি মানব শরীরে এবং আয়রন অভাবের উপসর্গ
গুলো কি কি এবং তার চিকিৎসা কি সে সকল তথ্য আমরা উপরে আলোচনা করেছি। আপনি যদি
উপরের একটি বিষয় গুলো পড়ে থাকেন তাহলে এ সম্পর্কে সকল তথ্য সম্পর্কর জানতে
পারবেন।
আশা করছি আপনি আমার আর্টিকেল থেকে কাঙ্খিত বিষয়গুলি জানতে পেরেছেন। এতক্ষন
আমাদের আর্টিকেলের সঙ্গে থাকার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ। এ ধরনের আরো
গুরুত্বপূর্ণ তথ্যমূলক আর্টিকেল পেতে আমাদের ওয়েবসাইটটিকে নিয়মিত ভিজিট করুন
এবং আপনি যদি উপকৃত হয়ে থাকেন তাহলে আপনার বন্ধুদের মাঝে শেয়ার করতে ভুলবেন না।
আপনি চাইলে আমদের ওয়েবসাইট টিকে ফলো করে রাখতে পারেন ধন্যবাদ।
আমরা জানবোর নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url