থানকুনি পাতার অসাধারণ উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে ২০টি তথ্য জানুন
থানকুনি পাতার অসাধারণ উপকারিতা স্বাস্থ্য উপকারিতা সম্পর্কে আজ আমরা জানতে
চলেছি। থানকুনি পাতার অনেক ঔষধি গুন থাকায় আদিকাল থেকে থানকুনি পাতার ব্যবহার
আমাদের সমাজে হয়ে এসেছে অনেক সমস্যার সমাধানে।
থানকুনি পাতার বিভিন্ন ঔষধি গুন ও বিভিন্ন উপকারিতার সাথে আজ আমরা পরিচিত হতে
চলেছি।যৌবন ধরে রাখতে থানকুনি পাতার উপকারিতা অতুলনীয়। তবে দেরি কেন চলুন
এর বিভিন্ন গুনাগুন ও উপকারিতা সম্পর্কে জেনে নেয়।
পেজ সূচিপত্রঃ থানকুনি পাতার অসাধারণ উপকারিতা
- থানকুনি পাতার অসাধারণ উপকারিতা
- যৌবন ধরে রাখতে থানকুনি পাতার উপকারিতা
- থানকুনি পাতা খাওয়ার নিয়ম
- গর্ভাবস্থায় থানকুনি পাতা খাওয়ার উপকারিতা
- থানকুনি পাতার পুষ্টি উপাদান
- পেটের সমস্যায় থানকুনি পাতা
- চুলের জন্য থানকুনি পাতার উপকারিতা
- থানকুনি পাতার অপকারিতা
- থানকুনি পাতার সঠিক ব্যাবহার
- লেখকের শেষ কথাঃ থানকুনি পাতার অসাধারণ উপকারিতা
থানকুনি পাতার অসাধারণ উপকারিতা
থানকুনি পাতার অসাধারণ উপকারিতা সম্পর্কে আমরা অনেকেই অবগত নয়, আজকে এর
অসাধারণ উপকারিতা গুলো সম্পর্কে জানব। থানকুনি পাতা কে ইংরেজিতে Centella
Asiatica বলা হয়ে থাকে।সাধারণত বাংলার গ্রাম অঞ্চলে এটি অনেক পরিমাণে পাওয়া
যায়, এবং গ্রাম অঞ্চলের মানুষগুলো এর অনেক ঔষধি গুণ ব্যবহার করে থাকে।
আয়ুর্বেদিক চিকিৎসায় থানকুনি পাতার ব্যবহার বহু যুগ ধরে চলে আসছে। আমাদের
দেহের নিত্যদিনের বিভিন্ন পুষ্টি চাহিদা পূরণ করতে থানকুনি পাতার অনেক গুরুত্ব
রয়েছে।
থানকুনি পাতা ২০ টি উপকারিতা
- থানকুনি পাতাতে থাকা ফাইবার আমাদের হজম শক্তি উন্নতিতে সাহায্য করে। এটি যেমন পেট ফাঁপা ও কোষ্ঠকাঠিন্য সমস্যা থেকে মুক্তিতে।
- ডানকুনি পাতায় থাকা অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট উপাদান ত্বকের বিভিন্ন দাগ দূর করে ত্বক উজ্জ্বল করতে সাহায্য করে।
- থানকুনি পাতাতে রয়েছে এমন গুরুত্বপূর্ণ উপাদান যা ক্ষত নিরাময় ও নতুন করে গঠনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
- থানকুনি পাতায় রয়েছে ট্রাইটারপেয়েড উপাদান, যা স্মৃতিশক্তি বৃদ্ধিতে সাহায্য করে থাকে।
- থানকুনি পাতায় রয়েছে এমন কিছু গুরুত্বপূর্ণ উপাদান যা শরীরের প্রদাহ প্রতিরোধ করে এবং বাতের ব্যথা দূরীকরণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
- থানকুনি পাতায় থাকা অ্যান্টি টক্সিন রক্তের ক্ষতিকর উপাদান দূর করে এবং ব্রোনের সমস্যা কমাতে সাহায্য করে।
- থানকুনি পাতায় রয়েছে পটাশিয়াম, যার রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ করে এবং রক্তনালীকে শীতল রাখে।
- থানকুনি পাতায় এন টি ইনফর্মেটরি উপাদান পাওয়া যায়, যা লিভারের প্রদাহ কমাতে সাহায্য করে।
- থানকুনি পাতা রয়েছে বিটা উপাদান, যা ক্ষুধা বাড়িয়ে দেয় এবং খাবারের আগ্রহ তৈরি করে।
- থানকুনি পাতাতে এমন কিছু উপাদান রয়েছে যা গলা ব্যথা ও কাশি দূর করতে সাহায্য করে।
- থানকুনি পাতায় থাকা ন্যাচারাল উপাদান রক্ত সংশোধন বৃদ্ধি করে এবং শরীরের শক্তি যোগায়।
- থানকুনি পাতায় থাকা ইনসুলিন কার্যক্ষমতা বৃদ্ধি করে এবং রক্তের শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণ করে।
- থানকুনি পাতায় রয়েছে ভিটামিন এ, যা চোখের দৃষ্টি শক্তি ভালো রাখতে সাহায্য করে।
- থানকুনি পাতায় থাকা প্রাকৃতিক তেল ঠোঁটের শুষ্কতা রোধ করতে এবং ঠোঁট নরম করতে সাহায্য করে।
- থানকুনি পাতার গুরুত্বপূর্ণ উপাদান প্রস্রাবের সমস্যা দূর করার সাহায্য করে।
- থানকুনি পাতায় রয়েছে এমন কতগুল উপাদান যা অতিরিক্ত পানি কমিয়ে ওজন কমাতে সাহায্য করে।
- থানকুনি পাতা খেলে গ্যাস্ট্রিক এসিডিটির মাত্রা নিয়ন্ত্রণে থাকে, এবং বুক জ্বালাপোড়া কমায়।
- থানকুনি পাতায় রয়েছে প্রচুর অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট সমৃদ্ধ উপাদান, যা ত্বকের কোষ পূর্ণ গঠন করে এবং বার্ধক্যের লক্ষণ দূর করে।
-
থানকুনি পাতায় রয়েছে এমন উপাদান, যা মানসিক চাপ কমায় এবং অবসাদ
দূরে রাখতে সাহায্য করে।
-
থানকুনি পাতায় থাকা উপাদান শরীরের তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণ করে এবং জ্বর
কমাতে ভালো কার্যকরী ভূমিকা পালন করে।
যৌবন ধরে রাখতে থানকুনি পাতার উপকারিতা
যৌবন ধরে রাখতে থানকুনি পাতার উপকারিতা সম্পর্কে এখন আমরা বেশ কিছু চমৎকার তথ্য
জানতে চলেছি। সুস্থ দেহ একটি মানুষের জন্য বড় সম্পদ। এই সম্পদ রক্ষা করার জন্য
আমরা সবকিছু করতে পারি। নিজেকে ভালোবাসা না এমন মানুষ খুব কমই পাওয়া যায়। এই
সুন্দর দেহকে সারা জীবন সুস্থ সবল ও কর্মক্ষম রাখতে থানকুনি পাতার বিশেষ ভূমিকা
রয়েছে।
থানকুনি পাতায় থাকা উচ্চ মাত্রায় এন্টিঅক্সিডেন্ট আমাদের শরীরের ফ্রি
রেডিকুলার দূর করে, যার ফলে কোষের ক্ষতি রোধ হয়। বিভিন্ন সমস্যা দূর করে এবং
ত্বকের বয়স জনিত সমস্যা থেকে রক্ষা করে। থানকুনি পাতায় থাকো উপাদান আমাদের
বয়সের সাপ কমাতে সাহায্য করে। থানকুনি পাতা আমাদের শরীরের কোলোজেন উপাদান
বাড়িয়ে দেয়, আর এই ক্লোজিং ত্বকের ইলাস্টাসিটি ধরে রাখে এবং বলিরেখা গঠনে
বাধা প্রদান করে।
আরো পড়ুনঃশিমুল মূল খাওয়ার উপকারিতা
থানকুনি পাতায় রয়েছে ভিটামিন সি, যা ত্বকের মৌলিক উপাদান নিয়ন্ত্রণ করে। এটি
ত্বকের উজ্জ্বলতা বৃদ্ধি করে, রঙের সমতা বজায় রাখি এবং নতুন কোষ গঠনে সাহায্য
করে। থানকুনি পাতায় থাকা ক্যালসিয়াম ও আয়রন উপাদান ত্বকের কোষ পুষ্টি যোগায়
এবং ত্বকের বার্ধক্য রোধ করে। থানকুনি পাতা প্রতিদিন সকালে কাঁচা বা রস পান
করতে পারলে শরীরের বিভিন্ন সমস্যা দূর হয়। থানকুনি পাতার পেস্ট বানিয়ে সরাসরি
ত্বকের ব্যবহার করা যেতে পারে এটি ত্বকের অনেক সমস্যা থেকে মুক্তি দেয়। এর
সাথে সাথে থানকুনি পাতা সালাদ হিসেবেও খাওয়া যায়।
থানকুনি পাতা খাওয়ার নিয়ম
থানকুনি পাতা খাওয়ার নিয়ম সম্পর্কে এখন আমরা বিস্তারিত তথ্য জানতে
চলেছি। থানকুনি পাতা আমাদের স্বাস্থ্যের জন্য অনেক উপকারী, এটি
বিভিন্নভাবে খাওয়া হয়ে থাকে। এটি চাইলেই কাঁচা খাওয়া
যায়, রান্না করে ও পেটে রস করে খাওয়ার প্রচলন আমাদের সমাজে বহাল
রয়েছে। থানকুনি পাতা আপনি যেভাবে খান না কেন এর উপকার পাবেন। তবে
সবচেয়ে ভালো উপকার পেতে কিছু নিয়ম মেনে থাকতে খাওয়া উচিত চলুন সে সম্পর্কে
জেনে নেওয়া যাক।
- কাঁচা থানকুনি পাতা ভালোভাবে ধুয়ে পরিষ্কার করে সরাসরি সালাদ হিসেবে খাওয়া যেতে পারে। প্রতিদিন ২ থেকে ৩ টি পাতা খাওয়ার স্বাস্থ্যের জন্য উপকারী।
- ১০-১২ কি থানকুনি পাতা ভালোভাবে ধুয়ে এক গ্লাস পানিতে মিশিয়ে সকালে খালি পেটে খেলে স্বাস্থ্যের জন্য ভালো প্রকার পাওয়া যায়। এতে করে শরীর থেকে বিষাক্ত পদার্থগুলো বের হয়ে যেতে সাহায্য করে।
- থানকুনি পাতা সিদ্ধ করে সামান্য লবণ, সরিষার তেল ও পেঁয়াজ দিয়ে ভর্তা তৈরি করে ভাতের সাথে খেলে খাবারের স্বাদ বাড়ে ও শরীরের জন্য উপকারী ভূমিকা পালন করে।
- থানকুনি পাতা সিদ্ধ করে চায়ের মতো করে খেলেও ভালো প্রকার পাওয়া যায়। দিনে ১ বার এই পাতার চাঁদ চা পান করলে হজম শক্তি বৃদ্ধি পায় ও শরীরের সতেস থাকে।
- থানকুনি পাতার শুকনো গুড়ো করে সংরক্ষণ করে প্রতিদিন এক চামচ পাউডার সকালে পানিতে মিশিয়ে খেলে ভালো স্বাস্থ্য উপকারিতা পাওয়া যায়।
- তাজা থানকুনি পাতা ব্লেন্ড করে মধু ও দলের সাথে মিশিয়ে ত্বকে লাগালে ত্বকের উজ্জ্বলতা বাড়ে এবং বলিরেখা কমায়। থানকুনি পাতার এই পেস্ট ত্বকে ১৫ থেকে ২০ মিনিট লাগিয়ে রেখে ধুয়ে ফেলতে হবে।
- থানকুনি পাতার রস শরীরের যে কোন ক্ষতস্থানে লাগালে ক্ষত দ্রুত সারাতে সাহায্য করে। শরীরের বিভিন্ন রকম পুরাতন দাগ মিশাতেও এর ভালো উপকার পাওয়া যায়।
- থানকুনি পাতার পেস্ট নারকেলের সাথে মিশিয়ে চুলের গোড়ায় লাগালে চুল মজবুত হয়। এটি সপ্তাহে একবার ব্যবহার করা যেতে পারে।
- থানকুনি পাতা গরম পানিতে ফুটে এসে পানিতে পা ভিজিয়ে রাখলে ক্লান্তি দূর হয় এবং পায়ের সংক্রমণ চলে যায়।
কোন কিছু অতিরিক্ত সেবন ভালো নয় তাই থানকুনি পাতা অতিরিক্ত খাওয়া থেকে বিরত
থাকতে হবে।বেশি খেলে ডায়রিয়া বা বমি বমি ভাব ভাবে সম্ভাবনা
রয়েছে। গর্ভবতী মায়েদের ক্ষেত্রে এবং শিশুদের ক্ষেত্রে চিকিৎসকের
পরামর্শ নিয়ে এটি ব্যবহার করে উত্তম। এবং যাদের ত্বকে এলার্জি রয়েছে
তাদের ক্ষেত্রে চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে ব্যবহার করতে হবে।
গর্ভাবস্থায় থানকুনি পাতা খাওয়ার উপকারিতা
গর্ভাবস্থায় থানকুনি পাতা খাওয়ার উপকারিতা রয়েছে
অনেক। থানকুনি পাতা প্রাকৃতিক ঔষধি গ্রহণ সমৃদ্ধ একটি পাতা, যা
প্রাচীনকাল থেকে শারীরিক বিভিন্ন সমস্যার ক্ষেত্রে ব্যবহৃত হয়ে
এসেছে।গর্ভাবস্থায় এ পাতার ব্যবহারের আগে অবশ্যই কিছু বিষয় সতর্ক থাকতে
হবে। সঠিক পরিমাণে ব্যবহার করলে গর্ভাবস্থায় এর উপকারিতা পাওয়া সম্ভব।
- থানকুনি পাতায় উপস্থিত ফাইবার হজমের ক্ষেত্রে ভালো উপকার দিয়ে থাকে। গর্ভাবস্থায় কোষ্ঠকাঠিন্য ও পেটের সমস্যা দূর করতে থানকুনি পাতার ব্যবহার করতে পারেন তবে তা পরিমিত পরিমাণে ব্যবহার করতে হবে।
- গর্ভাবস্থায় আয়রনের অনেক গুরুত্ব রয়েছে। থানকুনি পাতা আয়রনের একটি ভালো উৎস। এই পাতা খেলে রক্তশূন্যতা দূর ও হিমোগ্লোবিনের মাত্রা বৃদ্ধি পায়।
- গর্ভাবস্থায় পরিমানে থানকুনি পাতা খেলে শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ে। এটি আপনার শরীরের বিভিন্ন কোষের ক্ষয় রোধ করে এবং ইনফেকশন থেকে রক্ষা করতে সাহায্য করে।
- থানকুনি পাতায় রয়েছে ভিটামিন সি, যা গর্ভের শিশুর হাড় ও ত্বক গঠনে সহায়ক ভূমিকা পালন করে। গর্ভ অবস্থায় সাধারণত ১ থেকে ২ পাতা খাউয়া যেতে পারে।
- গর্ভাবস্থায় উচ্চ রক্তচাপ একটি সাধারণ সমস্যা। থানকুনি পাতায় রয়েছে পটাশিয়াম উপাদান, যা রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে।
- থানকুনি পাতায় রয়েছে এন্টি ইনফরমেটরি উপাদান, যা গর্ভ অবস্থায় শারীরিক ব্যথা ও ফলাভাব কমাতে সাহায্য করে।
- গর্ভাবস্থায় মানসিক চাপ একটি সাধারণ সমস্যা, থানকুনি পাতার নির্দিষ্ট উপাদান গর্ভবতী মায়ের মানসিক অবস্থা ভালো রাখে।
থানকুনি পাতার পুষ্টি উপাদান
থানকুনি পাতার পুষ্টি উপাদান অনেক রয়েছে যা আমাদের শারীরিক ও মানসিক
উভয় ক্ষেত্রে সাহায্য করে। এই পাতা আমাদের খাদ্য পুষ্টি ঘাটতি পূরণ
করতে সহায়ক ভূমিকা পালন করে। থানকুনি পাতায় অনেক পুষ্টি উপাদান
রয়েছে, অনেক পুষ্টি উপাদান থাকা সত্ত্বেও এটি ব্যবহারে সাবধানতা
অবলম্বন করতে হবে। চলুন থানকুনি পাতার পুষ্টি উপাদান সম্পর্কে বিস্তারিত
জেনে নেই।
১০০ গ্রাম থানকুনি পাতার পুষ্টি উপাদান
- শক্তিঃ ৪৩ কিলো ক্যালরি
- প্রোটিনঃ ৩.৭ গ্রাম
- কার্বোহাইড্রেটঃ ৭.৮ গ্রাম
- ফাইবারঃ ১.৬ গ্রাম
- ফ্যাটঃ ০.৯ গ্রাম
- ভিটামিন এঃ ১৮০ ইউনিট
- ভিটামিন সিঃ ৪.০ মিলিগ্রাম
- ভিটামিন বি ২ঃ ০.১৯ মিলিগ্রাম
- ক্যালসিয়ামঃ ১৭১ মিলিগ্রাম
- আয়রনঃ ৫.৬ মিলিগ্রাম
- পটাশিয়ামঃ ৩৪৪ মিলিগ্রাম
- ফসফরাসঃ ৫৭ মিলিগ্রাম
পেটের সমস্যায় থানকুনি পাতা
পেটের সমস্যায় থানকুনি পাতা এর ব্যবহার আদিকাল থেকে হয়ে
এসেছে। থানকুনি পাতা ব্যবহার করলে পেটের বিভিন্ন সমস্যার ক্ষেত্রে
কেমন প্রভাব ফেলবে সেই বিষয় সম্পর্কে আমরা বেশ কিছু তথ্য
জানবো। থানকুনি পাতায় থাকা ভেষজ উপাদান পেটের সমস্যার সমাধানে
বিশেষভাবে কাজ করে থাকে। আদিকাল থেকে পেটের সমস্যায় এর ব্যবহার হয়ে
আসছে।
থানকুনি পাতা পেটের নানা সমস্যার জন্য প্রাকৃতিক ওষুধ হিসেবে ব্যবহার করা
হয়। গ্যাস, অম্বল, পেট ফাপা বা হজমের সমস্যা হলে থানকুনি
পাতা দারুন কাজে আসে। প্রতিদিন সকালে ২-৩ টি থানকুনি পাতা খেলে
পেটের সমস্যা দূর হয় এবং হজম শক্তি বাড়ে। এবং গ্যাসের সমস্যা কম
হয়ে থাকে।থানকুনি পাতার রস পেটের জন্য খুব ভালো।
থানকুনি পাতায় রয়েছে ফাইবার উপাদান যা আমাদের হজম শক্তি বাড়িয়ে হজমের
কার্যকারিতা উন্নত করে। থানকুনি পাতার তিক্ত সাধ হজম শক্তি বৃদ্ধি করে। এটি
আপনার খাবার সহজে পচনশীল করে তুলবে। থানকুনি পাতা লিভারের কার্যক্ষমতা
বাড়িয়ে খাবার হজমে সাহায্য করে। তবু অতিরিক্ত থানকুনি পাতা খাওয়া
উচিত নয়, কারণ এটি ক্ষুধা মন্দা বা দুর্বলতা বয়ে আনতে
পারে। তবে পেটের সমস্যায় থানকুনি পাতা প্রাকৃতিক সমাধান হলেও পরিমিত
মাত্রায় খাওয়া ভালো।
চুলের জন্য থানকুনি পাতার উপকারিতা
চুলের জন্য থানকুনি পাতার উপকারিতা সম্পর্কে আমরা বেশ কিছু তথ্য জানতে
চলেছি। থানকুনি পাতায় থাকা পুষ্টি উপাদান চুলের বৃদ্ধি, চুল
মজবুত করা, ও মাথার স্কাল এর বিভিন্ন সমস্যার সমাধানে
সহায়ক ভূমিকা রাখে। চলুন চুলের ক্ষেত্রে থানকুনি পাতা
কিভাবে সহায়ক ভূমিকা পালন করে পার্শ্বপ্রতিক্রা মুক্তভাবে তা সম্পর্কে
বিস্তারিত জেনে নেই।
- থানকুনি পাতায় থাকা অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট উপাদান চুলের কোষ গুলোকে ক্ষতির হাত থেকে রক্ষা করে এবং চুলের বৃদ্ধিতে ব্যাপক ভূমিকা পালন করে।
- থানকুনি পাতায় রয়েছে ভিটামিন সি, যা চুলের গোড়া শক্তিশালী করে এবং চুল পড়া রোধ করে।
- থানকুনি পাতায় ফাইটো কেমিক্যাল রয়েছে, যা স্কেল পেয়ে রক্ত সঞ্চালন বাড়িয়ে চুলের দ্রুত বৃদ্ধি নিশ্চিত করে।
- থানকুনি পাতায় রইয়েছে ম্যাগনেসিয়াম উপাদান , যা চুলের গোঁড়ায় পুষ্টি জগাই এবং চুলের ঘনত্ব বিদ্ধি করতে সাহজ্জ করে।
- থানকুনি পাতায় রয়েছে আন্টি অক্সিডেন্ট উপাদান , যা চুলের সংক্রামণ প্রতিরোধ করে এবং চুলের স্বাস্থ্য ভালো রাখতে সাহায্য করে।
- থানকুনি পাতায় এমন কিছু উপাদান পাউয়া যায় যা চুলকে প্রাকিতিক ভাবে উজ্জ্বল করতে সাহায্য করে।
- থানকুনি পাতায় থাকা আয়রন উপাদান স্কাল্পে রক্ত সঞ্চালন বাড়ায় এবং চুলের বিদ্ধিতে সাহায্য করে।
- থানকুনি পাতায় রয়েছে ট্যানিন উপাদান , যা চুলের গোঁড়া শক্তিশালী করে এবং চুল ভাঙ্গা রোধ করতে সাহায্য করে।
- থানকুনি পাতার উপাদান চুলের খুসকি প্রতিরিরধে সাহায্য করে থাকে।
থানকুনি পাতার পেস্ট বা তেল আপনার স্কাপ এবং চুলের জন্য অনেক উপকারি
ভূমিকা পালন করে থাকে। এটি ব্যাবহারের সময় আপনার চুল এর ওপরে কেমন
পরতিক্রিয়া করে সেইয়দিকে নজর রাখতে হবে। এবং স্কেপের সম্বেদনশিলতা
পরিক্ষা করে তাঁর পরে ব্যাবহার করে হবে। যেকোনো সমস্যায় এর ব্যাবহারের
আগে অবশ্যয় একজন অভিজ্ঞ ডাক্তার এর পরামসশ নিয়ে ব্যাবহার করতে হবে।
থানকুনি পাতার অপকারিতা
থানকুনি পাতার অপকারিতা সম্পর্কে আমাদের জেনে রাখা উচিদ। থানকুনি পাতার
অসাধারণ উপকারিতা রয়েছে , তেমনি অতিরিক্ত খেলে কিন্তু কিছু সমস্যাও দেখা
দিতে পারে। যেমন, বেশি খেলে লিভারের ওপর চাপ পড়ে, স্নায়ু দুর্বল হতে পারে,
আর মাথা ঝিমঝিম লাগতে পারে। পেটের সমস্যাও হয়, গ্যাস্ট্রিক বা ডায়রিয়া
হতে পারে। গর্ভবতী মায়েদের জন্যও এটা নিরাপদ নয়, কারণ গর্ভপাতের ঝুঁকি
বাড়তে পারে।
আবার, কিছু মানুষের ত্বকে অ্যালার্জি হতে পারূ লালচে দাগ বা চুলকানি দেখা
দেয়। ডায়াবেটিস রোগীদের জন্যও একটু চিন্তার বিষয়, কারণ থানকুনি রক্তের
শর্করা কমিয়ে দিতে পারে। আর যদি অন্য কোনো ওষুধ খাওয়া হয়, সেটার সঙ্গেও
কখনও কখনও বিরূপ প্রতিক্রিয়া হতে পারে। তাই হুট করে অনেকখানি না খেয়ে,
পরিমিত খাওয়াটাই ভালো।
থানকুনি পাতার সঠিক ব্যাবহার
থানকুনি পাতার সঠিক ব্যাবহার সম্পর্কে বলতে গেলে, প্রাচীনকাল
থেকে আয়ুর্বেদ ও ভেষণ চিকিৎসা ক্ষেত্রে থানকুনি পাতার ব্যবহার
দেখা যায়। বর্তমান সময়ে প্রচুর মেডিসিন বাজারে রয়েছে, যার ফলে
গাছ গাছড়ার ব্যবহার করে চিকিৎসা পদ্ধতি অনেকটাই কমে গেছে। আপনার যদি
স্বাভাবিকভাবে পাতা ব্যবহার করেন, সে ক্ষেত্রে স্বাভাবিক অনেক সমস্যা
থেকে আপনারা মুক্তি পেতে পারেন।
স্বাভাবিকভাবে থানকুনি পাতা ব্যবহার করলে পেটের বিভিন্ন সমস্যা তৈরিতে বাধা
প্রদান করে থাকে এবং হজম সমস্যা থেকে আপনাকে মুক্তি দিতে
পারে। হানকুনি পাতায় থাকা বিভিন্ন উপাদান ত্বকের যত্নে ব্যাপক
কার্যকরী। ত্বকের ব্রণ, ফুসকুড়ি এবং কত নিরাময় কার্যকর ভূমিকা
পালন করে থাকে। চুলের যে কোন সমস্যা সমাধানের ক্ষেত্রে খেয়াল করে
পাতা হতে পারে একটি জনপ্রিয় মাধ্যম।
থানকুনি পাতা পরিমিত পরিমাণে ব্যবহার করলে মানসিক চাপ ও স্মৃতিশক্তি
বৃদ্ধিতে কার্যক্রম ভূমিকা রাখে। ব্যবহারের ফলে স্নায়ুতন্ত্র শান্ত
থাকে এবং মানসিক স্বচ্ছতা বৃদ্ধি পায়। আপনার শরীরে যদি কোন ক্ষত হয়ে
থাকে, সে ক্ষেত্রে থানকুনি পাতার রস ক্ষতস্থানে লাগালে উপকার পাওয়া
যাবে। আমরা এই পোস্টটি আপনাদের সচেতন করার উদ্দেশ্যে লিখেছি, যে
কোন চিকিৎসার ক্ষেত্রে চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে এই প্রাকৃতিক উপাদান গুলো
ব্যবহার করবেন।
লেখকের শেষ কথাঃ থানকুনি পাতার অসাধারণ উপকারিতা
থানকুনি পাতার অসাধারণ উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে এতক্ষন আমরা
আলোচনা করলাম এবং এই সম্পর্কে আমরা প্রয়োজনীয় অনেক তথ্য জানতে
পেরেছি। এতক্ষণের আলোচনায় আমরা বুঝতে পারলাম যে, কানপুরি পাতার
অতিরিক্ত ব্যবহার না করে সঠিক নিয়মে পরিণত পরিমাণ পাতার ব্যবহার
করলে আমাদের শরীরের অনেক উপকারে আসে এই থানকুনি পাতা।
আশা করছি আপনি আমার আর্টিকেল থেকে কাঙ্খিত বিষয়গুলি জানতে পেরেছেন। এতক্ষন
আমাদের আর্টিকেলের সঙ্গে থাকার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ। এ ধরনের আরো
গুরুত্বপূর্ণ তথ্যমূলক আর্টিকেল পেতে আমাদের ওয়েবসাইটটিকে নিয়মিত
ভিজিট করুন এবং আপনি যদি উপকৃত হয়ে থাকেন তাহলে আপনার বন্ধুদের মাঝে শেয়ার
করতে ভুলবেন না। আপনি চাইলে আমদের ওয়েবসাইট টিকে ফলো করে রাখতে পারেন
ধন্যবাদ।
আমরা জানবোর নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url