গর্ভাবস্থায় আয়রন ট্যাবলেট খাওয়ার নিয়ম

গর্ভাবস্থায় আয়রন ট্যাবলেট খাওয়ার নিয়ম কি তা আজকে আমরা বিস্তারিত জানতে চলেছি। আয়রন বিভিন্ন ধরনের ভিটামিন এবং খনিজের মধ্যে একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ উপাদান। এটি হিমোগ্লোবিনের একটি প্রধান উপাদান এবং রক্তের মাধ্যমে অক্সিজেন পরিবহণে সাহায্য করে।

গর্ভাবস্থায়-আয়রন-ট্যাবলেট-খাওয়ার-নিয়ম

শরীরে আয়রনের ঘাটতি হলে বিভিন্ন ধরনের শারীরিক সমস্যা দেখা দিতে পারে, যার মধ্যে ক্লান্তি, দুর্বলতা, এবং রক্তস্বল্পতা (অ্যানিমিয়া) অন্যতম। গর্ভকালীন সময়ে শরীরে আয়রনের চাহিদা অনেকখানি বেড়ে যায়, তাই গর্ভাবস্থায় মা ও শিশু সুস্থতার জন্য আয়রন অনেক গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। 

পেজ সূচিপত্রঃগর্ভাবস্থায় আয়রন ট্যাবলেট খাওয়ার নিয়ম

গর্ভাবস্থায় আয়রন ট্যাবলেট খাওয়ার নিয়ম

গর্ভাবস্থায় আয়রন ট্যাবলেট খাওয়ার নিয়ম কি তা সম্পর্কে আমরা আজকে বিস্তারিত জানতে চলেছি।বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা ও বাংলাদেশ সরকারের নির্দেশনা মতে, গর্ব অবস্থায় প্রতিদিন প্রায় ৬০ মিলিগ্রাম করে আয়রন ট্যাবলেট সেবন করা উচিত। বাংলাদেশের গর্ভকালীন সময়ের জন্য আয়রন ও ফলিক এসিডের সমন্বয়ে "আয়রন-ফলিক এসিড" নামক ট্যাবলেট ফার্মেসিতে কিনতে পাওয়া যায়। এই ওষুধগুলো গর্ভাবস্থায় আয়রনের সঠিক পরিমাণে যোগান দিয়ে থাকে। 
গর্ভাবস্থায় একজন গর্ভবতী মায়ের জন্য আয়রন এবং ফলিক এসিড  অনেক গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। ফলিক এসিডে থাকা পুষ্টি উপাদান শিশুর ব্রেন ও স্নায়ুতন্ত্রের বিকাশে সাহায্য করে। এবং নানা জন্মগত ত্রুটি প্রতিরোধ করতে সাহায্য করে। আয়রন রক্তশূন্যতা দূরীকরণে ও বিশেষভাবে কাজে দেয় উল্লেখ্যচ, আয়রনের অভাবজনিত রক্তশূন্যতার মত কিছু বিশেষ লক্ষণের ডাক্তার আপনাকে ৬০ মিলিগ্রামের বেশি দোষের আয়রন সেবনের পরামর্শ দিতে পারে।

গর্ভাবস্থায় আয়রন ট্যাবলেট খাওয়ার কিছু গুরুত্বপূর্ণ তথ্য ও নিয়ম

গর্ভাবস্থায় আয়রন ট্যাবলেট খাওয়ার সময় সাধারণত সকাল বা রাতে খাবারের পর নেওয়া ভাল। এক দিনে একটি ট্যাবলেট যথেষ্ট। খাবারের সঙ্গে বা খাবারের পর খেলে শরীর ভালভাবে শোষণ করতে পারে। অতিরিক্ত ক্যালসিয়াম এবং দুধের সঙ্গে একসাথে খাওয়া থেকে বিরত থাকুন, কারণ তা আয়রনের শোষণ কমাতে পারে।
  • খাওয়ার সময়: সকালে বা রাতে খাবারের পর আয়রন ট্যাবলেট খাওয়া ভাল। ট্যাবলেটটি এক দিনে একটি নেওয়া উচিত।
  • ভিটামিন সি: আয়রন শোষণ বাড়ানোর জন্য ভিটামিন সি সমৃদ্ধ খাবার (যেমন কমলা, আমলকি) সঙ্গে খেতে পারেন।
  • দুধ ও ক্যালসিয়াম: দুধ বা ক্যালসিয়াম সমৃদ্ধ খাবারের সঙ্গে একসাথে আয়রন ট্যাবলেট খাওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয় না, কারণ ক্যালসিয়াম আয়রনের শোষণ কমাতে পারে।
  • পানি ও ফলমূল: পর্যাপ্ত পানি ও ফলমূল খাওয়ার মাধ্যমে শরীরের পুষ্টি আরও ভালোভাবে শোষিত হয়।
  • ডাক্তারের পরামর্শ: গর্ভাবস্থায় আয়রন ট্যাবলেট খাওয়ার আগে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত।

গর্ভাবস্থায় আয়রন-ফলিক এসিড ট্যাবলেট কিভাবে খাবেন 

গর্ভাবস্থায় আয়রন ফলিক-এসিড ট্যাবলেট কিভাবে খাবেন তা সম্পর্কে কিছু গুরুত্বপূর্ণ বিস্তারিত তথ্য তুলে ধরবো। আয়রন ফলিক-এসিড ট্যাবলেট খালি পেটে খেলে সবচেয়ে ভালো কাজ করে। তাই যে কোন খাবার খাওয়ার অন্তত ১ ঘন্টা আগে অথবা ২ ঘন্টা পরে ১ গ্লাস পানিতে দিয়ে ট্যাবলেটটি সেবন করবেন। পানির পরিবর্তে ১ গ্লাস কমলার রস অথবা লেবুর শরবত দিয়ে ট্যাবলেট খেতে পারেন। কমলার রসে থাকা ভিটামিন সি শরীরকে আয়রনের শোষণে সাহায্য করে।

খালি পেটে "আয়রন-ফলিক এসিড ট্যাবলেট" খেলে কারো কারো পেটের অস্বস্তি সমস্যা দেখা দিতে পারে। সে ক্ষেত্রে ডাক্তার হয়তো আপনাকে খাবারের সাথে অথবা খাওয়ার ঠিক পর পরই ভরা পেটে ট্যাবলেটটি খেয়ে নেওয়ার পরামর্শ দিতে পারে। সে ক্ষেত্রে আপনি সেই নিয়ম অনুযায়ী আয়রন ট্যাবলেটটি খেতে পারে, এতে আপনি সমস্যা থেকে মুক্তি এবং ভালো ফলাফল পাবেন। 

আয়রন-ফলিক এসিড ট্যাবলেট সেবন করলে যা করবেন না

আয়রন-ফলিক এসিড ট্যাবলেট সেবন করলে যা করবেন না এই সম্পর্কে জেনে রাখা উচিত। আয়রন-ফলিক এসিড ট্যাবলেটের সাথে একই সময়ে অ্যান্টাসিড অথবা ক্যালসিয়াম ট্যাবলেট খাওয়া যাবে না।এতে আয়রনের কার্যকারিতা কমে যায়। এন্টাসিড অথবা ক্যালসিয়াম ট্যাবলেট খাওয়ার অন্তত ১ ঘন্টা আগে অথবা ২ ঘণ্টা পরে আয়রন ট্যাবলেট খাবেন। 

এছাড়াও কিছু কিছু খাবার শরীরে আয়রনের শোষণের হার কমে ফেলতে পারে। আয়রন ট্যাবলেট খাওয়ার সময় এসব খাবার এড়িয়ে চলা উত্তম। এই খাবারগুলো এড়িয়ে চলতে পারলে আয়রনের সঠিক শোষণ বাড়বে এবং সঠিক পুষ্টিগুণ পাওয়া যাবে। যে খাবারগুলো আয়রনের শোষণ বা কার্যকারিতা কমিয়ে দিতে পারে তার কয়েকটি উল্লেখ করা হলোঃ 
  • চা ও কফি
  • ডিম 
  • দুধ ও দুগ্ধজাত খাবার
  • সয়াবিন যুক্ত খাবার
  • ভিনেগার
উপরিক্ত এই খাবারগুলো বেশি পরিমাণে খেলে আয়রনের শোষণ কমিয়ে দিতে পারে এবং পুষ্টিগুণ নষ্ট হতে পারে। তাই আয়রন-ফলিক এসিড ট্যাবলেট সেবন করা অবস্থায় এই খাবারগুলো যতটা সম্ভব এড়িয়ে চলা ভালো, এতে ভালো ফলাফল পাওয়া সম্ভব। 

গর্ভাবস্থার কোন পর্যায় থেকে আয়রন ট্যাবলেট সেবন করবেন 

গর্ভাবস্থার কোন পর্যায় থেকে আয়রন ট্যাবলেট সেবন করবেন এই সম্পর্কে আমাদের সঠিক ধারণা রাখা উচিত। গর্ভাবস্থার শুরু থেকে প্রসব পরবর্তী তিন মাস পর্যন্ত আপনাকে দৈনিক ৬০ মিলিগ্রাম আয়রন যুক্ত ট্যাবলেট সেবন করতে হবে। সন্তান জন্ম তাদের তিন মাস পর পর্যন্ত এটি চালিয়ে যেতে হবে। গর্ভাবস্থায় আয়রন ট্যাবলেট সাধারণত প্রথম ট্রাইমিস্টার (০-১২ সপ্তাহ) থেকে শুরু করে তৃতীয় ট্রাইমিস্টার (২৭-৪০ সপ্তাহ) পর্যন্ত খেতে পরামর্শ দেওয়া হয়।
  • প্রথম ট্রাইমিস্টার: এই সময়ে আয়রনের প্রয়োজন না থাকলেও, অনেক ক্ষেত্রে গর্ভবতী মহিলার রক্তস্বল্পতা (অ্যানিমিয়া) দেখা দিতে পারে, তাই ডাক্তার পরামর্শ দিতে পারেন আয়রন ট্যাবলেট সেবন করতে।

  • দ্বিতীয় ও তৃতীয় ট্রাইমিস্টার: এই সময়ে শরীরে আয়রনের চাহিদা বেড়ে যায়, কারণ গর্ভস্থ শিশুর জন্য অতিরিক্ত রক্ত উৎপাদন প্রয়োজন। তাই আয়রন ট্যাবলেট খাওয়া বিশেষভাবে গুরুত্বপূর্ণ।

তবে, আয়রন ট্যাবলেট সেবনের আগে চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া খুবই জরুরি, কারণ অতিরিক্ত আয়রনও শরীরে সমস্যা সৃষ্টি করতে পারে।

গর্ভাবস্থায় আয়রন ট্যাবলেট সেবনের সম্পর্কে কিছু ভুল ধারণা

গর্ভাবস্থায় আয়রন ট্যাবলেট সেবনের সম্পর্কে কিছু ভুল ধারণা সমাজে প্রচলিত রয়েছে, এই ভুল ধারণা গুলো সম্পর্কে আজকে জানবো। অনেকে মনে করে গর্ভাবস্থায় প্রথম দিকে আয়রন সেবন করা যাবে না কিন্তু এটি সম্পূর্ণ ভুল ধারণা। বিজ্ঞান বলে সমাজে এমন ধারণা প্রচলিত আছে যে গর্ভধারণের প্রথম দুই-তিন মাস আয়রন সেবন করা উচিত নয়। তবে এর পক্ষে কোন প্রমাণ পাওয়া যায়নি। ও গর্ভের শিশুর জন্য গর্ভধারণের শুরু থেকে আয়রন সেবন করা খুবই গুরুত্বপূর্ণ।
গর্ভাবস্থায়-আয়রন-ট্যাবলেট-সেবনের-সম্পর্কে-কিছু-ভুল-ধারণা
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা গর্ভধারণের পর দ্রুত সম্ভব দৈনিক আয়রন ও ফলিক এসিড খাওয়া শুরু করার পরামর্শ দেয়। এবং সন্তান জন্মের পর তিন মাস পর্যন্ত এটি চালিয়ে যাওয়ার জন্য বলা হয়। আয়রন গর্ভবতী মায়ের রক্তশূন্যতা প্রতিরোধে সাহায্য করে। এছাড়াও এটি সঠিক সময়ের পূর্বে শিশুর জন্মদান এবং স্বাভাবিকের চেয়ে কম ওজনের শিশু জন্ম তাদের মত জটিল সমস্যা কমায়। 
একটি গবেষণায় দেখা গিয়েছে যে, গর্ভধারণের আগে থেকেই  "আয়রন-ফলিক এসিড ট্যাবলেট" সেবন করলে ২ বছর বয়সী শিশুর তুলনামূলক বেশি লম্বা হয় এবং হাতের সূক্ষ্ম কাজে বেশি পারদর্শী হয়।যেমনঃ জুতার ফিতা বাধা ও পেন্সিল দিয়ে আঁকা কি করা। গর্ভাবস্থায় আয়রন ট্যাবলেট সেবনে অনেক সামাজিক ভুল ধারণা রয়েছে, সেগুলোকে উপেক্ষা করে গর্ভধারণের শুরু থেকে সন্তান জন্মদানের পরে ৩ মাস পর্যন্ত আইরন ট্যাবলেট গ্রহণ করা উচিত। 

আয়রন-ফলিক এসিড ট্যাবলেট যে নামে পাবেন 

আয়রন-ফলিক এসিড ট্যাবলেট যে নামে পাবেন তা বিস্তারিত আলোচনা করা হলো। আয়রন-ফলিক এসিড ট্যাবলেট যে নামে পাবেন সেই সম্পর্কে জানা থাকলে আপনারা খুব সহজে যেকোন ফার্মেসি থেকে এই ওষুধগুলো কিনে সেবন করতে পারবেন। চলুন আইরন ট্যাবলেটের ব্যান্ডের নাম এবং কোম্পানিগুলো সম্পর্কে জেনে নেইঃ 
ব্র্যান্ড নাম কোম্পানি
ফেরো প্লাস এমিকো ল্যাবরেটরিজ লিমিটেড
জেনিফল প্লাস জেনিথ ফার্মাসিউটিক্যালস লিমিটেড
ফিওফল সিআই এস কে এফ ফার্মাসিউটিক্যালস লিমিটেড
ফিওফল এস কে এফ ফার্মাসিউটিক্যালস লিমিটেড
ফেরিগান মেডিমেট ফার্মাসিউটিক্যালস লিমিটেড
ফেরোসন টিআর হাডসন ফার্মাসিউটিক্যালস লিমিটেড
ফেরোস্প্যান ড্রাগ ইন্টারন্যাশনাল লিমিটেড
ফেরোসিট টিআর একমি ল্যাবরেটরিজ লিমিটেড 

জিংক যুক্ত ট্যাবলেট এবং ক্যাপসুল যে নামে পাবেন 

জিংক যুক্ত ট্যাবলেট এবং ক্যাপসুল যে নামে পাবেন তা সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে চলেছি। অনেক সময় আয়রন-ফলিক এসিড ট্যাবলেট জিংক যোগ করে থাকতে পারে। কিছু গবেষণা দেখা গিয়েছে যে, গর্ভাবস্থায় জিম খেলে বাচ্চার ওজন ভালো প্রভাব পড়ে তাই আপনি "আয়রন-ফলিক এসিড" ট্যাবলেটের পরিবর্তে জিনযুক্ত এসব ট্যাবলেট অথবা ক্যাপসুলও কিনে খেতে পারেন। এমন কয়েকটি জিং যুক্ত ট্যাবলেট এবং ক্যাপসুলের নাম এবং কোম্পানি উল্লেখ করা হলোঃ 
ব্র্যান্ড নাম কোম্পানি
জিফ সিআই স্কয়ার ফার্মাসিউটিক্যালস লিমিটেড
ফেরিক্স ভি রেনেটা লিমিটেড
প্রিনিড সিআই ইনসেপ্টা ফার্মাসিউটিক্যালস লিমিটেড
প্রিন্যাট সিআই হেলথকেয়ার ফার্মাসিউটিক্যালস লিমিটেড
কারোফল জেড বেক্সিমকো ফার্মাসিউটিক্যালস লিমিটেড
জিফোক্যাপ নুভিস্‌তা ফার্মা লিমিটেড
আইপেক-প্লাস অ্যারিস্টোফার্মা লিমিটেড
এ সকল ওষুধগুলো খাওয়ার আগে অবশ্যই একজন অভিজ্ঞ ডাক্তারের পরামর্শ নিয়ে খাওয়া উচিত।ওষুধগুলো সে বলে যদি কোন সমস্যা দেখা দেয় তাহলে ওষুধগুলো খাওয়া বন্ধ করে দ্রুত ডক্টরের শরণাপন্ন হন।

গর্ভাবস্থায় আয়রন সমৃদ্ধ খাবার

গর্ভাবস্থায় আয়রন সমৃদ্ধ খাবার গর্ভবতী মায়ের জন্য অনেক গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। আইরন ট্যাবলেটের পাশাপাশি আপনাকে নিয়মিত আয়রন সম্পৃক্ত খাবার খাওয়ার চেষ্টা করতে হবে। তবে মনে রাখতে হবে, শুধুমাত্র এসব খাবার দিয়েই সাধারণত গর্ব অবস্থায় আবেগের বাড়তি চাহিদা পূরণ করা সম্ভব হয় না। এর পাশাপাশি শিশুর সঠিক বিকাশে আয়রন ট্যাবলেট খাওয়া জরুরী। চলুন কিছু আয়োজন সমৃদ্ধ খাবার সম্পর্কে জেনে নেয়।
প্রাকৃতিক উৎস থেকে আয়রনসমৃদ্ধ খাবার
  • সবুজ শাকসবজি – পালং শাক, থানকুনি পাতা, মেথি শাক, কলমি শাক।
  • ডাল ও বাদাম – মসুর ডাল, ছোলা, মটর ডাল, চিনাবাদাম, কাঠবাদাম।
  • ফলমূল – খেজুর, কিশমিশ, আঙুর, আপেল, কলা, ডালিম।
  • শস্য ও বীজ – ওটস, গম, চালের ভূষি, তিল, সূর্যমুখীর বীজ।
  • বিভিন্ন ধরনের বাদাম – চিনাবাদাম, কাজুবাদাম, পেস্তাবাদাম। 
  • শুকনো ফল – খেজুর, নারিকেল, আখরোট। 
  • বিভিন্ন মাছ – চাপিলা, ট্যাংরা, কাচকি, মলা, টাটকিনি, শিং, ফেসা ও চেলা। 
  • প্রোটিনসমৃদ্ধ খাবার – লাল মাংস (গরু, খাসি), হাঁস-মুরগির মাংস, ডিমের কুসুম, মাছ (বিশেষ করে ইলিশ, টুনা, সার্ডিন)।
কিছু টিপস
ভিটামিন C সমৃদ্ধ খাবার (লেবু, কমলা, আমলকি) আয়রন শোষণে সাহায্য করে চা ও কফি বেশি খেলে আয়রন শোষণ কমে যেতে পারে। তাই আয়রন সমৃদ্ধ খাবার গুলো গ্রহণ করার পাশাপাশি এই টিপস গুলো ফলো করা উচিত। 

আইরন ট্যাবলেট এর পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া 

আইরন ট্যাবলেট এর পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া দেখা দিতে পারে। গর্ভাবস্থায় আয়রন ট্যাবলেট খাওয়ার নিয়ম জেনে সঠিক নিয়মে আইরন ট্যাবলেটের খাউয়া উচিদ। আইরন ট্যাবলেটের অনেক উপকারি গুন থাকা সত্তেউ কিছু পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া দেখা যায়। আইরন ট্যাবলেট খাওয়ার কিছু সাধারণ পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া হতে পারে, তবে এগুলো সব সময় হয় না এবং প্রত্যেকের শরীরের প্রতিক্রিয়া আলাদা হতে পারে। কিছু সাধারণ পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া হলো: 
  • কোষ্ঠকাঠিন্য
  • পাতলা পায়খানা
  • ড্রপের ক্ষেত্রে দাঁত কালচে হয়ে যাওয়া 
  • পেটের অস্বস্তি বা ব্যথা
  • কনস্টিপেশন (বদ্ধত্ব)
  • মলের রঙ কালো হওয়া
  • বমি বা বমি বমি ভাব
  • খাওয়ার আগ্রহ কমে যাওয়া
  • ত্বকের র‍্যাশ বা এলার্জিক প্রতিক্রিয়া
যদিও খালি পেটে আইরন ট্যাবলেট খাউয়া ভালো, তবুও পেট ব্যথা কিংবা পাতলা পায়খানা সমস্যা নিয়ন্ত্রনের জন্য খাবারের সাথে অথবা খাবারের ঠিক পরেই আইরন ট্যাবলেট সেবন করতে পারেন। সেই সাথে পর্যাপ্ত পানি ও ফাইবারযুক্ত খাবার খাবেন। এতে করে আয়রন ট্যাবলেটজনিত কোষ্ঠকাঠিন্য সমস্যা কিছুটা করতে পারে। তবে আপনার এসব পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া হলেও ডাক্তারের পরামর্শ ছাড়া ওষুধ খাওয়া বন্ধ করবেন না। 
আইরন-ট্যাবলেট-এর-পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া
পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া হলেও এই ওষুধ সেবন চালিয়ে যাওয়া খুব জরুরী। আপনি যদি খুব বেশি সমস্যা বা অস্বস্তি হয়, তাহলে ডাক্তারের পরামর্শ নিবেন। ডক্টর আপনাকে অন্য ব্যান্ডের ওষুধ কিংবা ট্যাবলেটের বদলে ইনজেকশন হিসেবে আয়রন গ্রহণে পরামর্শ দিতে পারে। তবে নিজে নিজে ডাক্তারের পরামর্শ ছাড়া ওষুধ বদল করে ফেলবেন না।  এছাড়া যদি আপনার এলার্জি রিএকশন দেখা দেয় তাহলে ওষুধ সেবন বন্ধ করে দ্রুত ডাক্তারের পরামর্শ নিবেন। 

লেখকের শেষ কথাঃগর্ভাবস্থায় আয়রন ট্যাবলেট খাওয়ার নিয়ম

গর্ভাবস্থায় আয়রন ট্যাবলেট খাওয়ার নিয়ম সম্পর্কে এতক্ষণ আমরা আলোচনা করেছি। গর্ভাবস্থায় আয়রন ট্যাবলেট খাওয়ার নিয়ম মেনে চললে মায়ের রক্তস্বল্পতা দূর করতে এবং শিশুর সঠিক শারীরিক উন্নয়ন নিশ্চিত করতে সহায়ক হবে। তবে, এটি শুরু করার আগে সবসময় ডাক্তারের পরামর্শ নেওয়া উচিত। সঠিক সময় এবং উপায়ে আয়রন গ্রহণ করলে, গর্ভাবস্থায় আয়রনের অভাব দূর হবে এবং আপনার স্বাস্থ্য ভালো থাকবে।

আশা করছি আপনি উক্ত আর্টিকেল থেকে কাঙ্খিত বিষয়গুলি জানতে পেরেছেন। এতক্ষন আমাদের আর্টিকেলের সঙ্গে থাকার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ। এ ধরনের আরো গুরুত্বপূর্ণ তথ্যমূলক আর্টিকেল পেতে আমাদের ওয়েবসাইটটিকে  নিয়মিত ভিজিট করুন এবং আপনি যদি উপকৃত হয়ে থাকেন তাহলে আপনার বন্ধুদের মাঝে শেয়ার করতে ভুলবেন না। আপনি চাইলে আমদের ওয়েবসাইট টিকে ফলো করে রাখতে পারেন ধন্যবাদ।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

আমরা জানবোর নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url